বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বিএসএফ-এর দ্বিবার্ষিক সীমান্ত সম্মেলন আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এটি দুই দেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে ৫৫তম মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক, যা বিএসএফ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মেলনে বিজিবির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং বিএসএফের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন ডিজি দলজিৎ সিং চৌধুরী। চার দিনব্যাপী এই বৈঠকে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, সীমান্তে বেড়া নির্মাণ, অবৈধ পারাপারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, আগামী ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই সম্মেলন। দুই বাহিনীর মধ্যে এটি প্রথম শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক, যা গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সীমান্ত সম্পর্কিত নানা জটিলতা নিরসনের পাশাপাশি পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে।
এর আগে, দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর সর্বশেষ দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২৩ সালের মার্চ মাসে ঢাকায়। সেই বৈঠকে সীমান্ত অপরাধ, চোরাচালান প্রতিরোধ, অনুপ্রবেশ ঠেকানোসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এবারের বৈঠকে আগের সিদ্ধান্তগুলো পর্যালোচনার পাশাপাশি নতুন পরিকল্পনা নির্ধারণ হতে পারে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘ ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, যা পাঁচটি রাজ্যের সঙ্গে বিস্তৃত। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ২ হাজার ২১৭ কিলোমিটার, ত্রিপুরায় ৮৫৬, মেঘালয়ে ৪৪৩, আসামে ২৬২ এবং মিজোরামের সঙ্গে ৩১৮ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। দীর্ঘ এই সীমান্তজুড়ে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড রোধে উভয় বাহিনী নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে কৌশল নির্ধারণ করে।
সীমান্তে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ও নিরাপত্তা জোরদার করতে বিজিবি-বিএসএফ-এর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড, চোরাচালান ও মানবপাচারের মতো সমস্যাগুলো দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
বৈঠকে সীমান্তে বেড়া নির্মাণের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে কিছু এলাকা যেখানে সীমান্ত চিহ্নিতকরণ ও বেড়া নির্মাণ নিয়ে জটিলতা রয়েছে, সেখানে সমাধানের জন্য উভয় পক্ষ একটি কার্যকর রূপরেখা নির্ধারণ করতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সীমান্ত অপরাধ কমানো ও উভয় দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য বিজিবি-বিএসএফ-এর মধ্যে এমন শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক চালিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।