কোনও অবস্থাতেই আলোচনা সম্ভব নয়। ভারতের এমনই কড়া মনোভাব দেখা গেল নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতেও। কুলভূষণ মামলার শুনানি শুরু হওয়ার আগে ভারতের প্রতিনিধির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করতে আসে পাকিস্তানের তরফের প্রতিনিধিরা। পাকিস্তানের এজি আনোয়ার মনসুর খান করমর্দন করতে হাত বাড়িয়ে দেন ভারতের বিদেশমন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দীপক মিত্তলের দিকে। তত্ক্ষণাত্ দীপক মিত্তল জোড় হাতে ‘নমস্কার’ জানিয়ে মনসুর খানের অভিবাদন প্রত্যাখ্যান করেন। স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়ে যান মনসুর খান।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পুলওয়ামার জঙ্গি হামলায় পাক-যোগের অভিযোগ এনে ইসলামাবাদকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায় ভারত। ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্পষ্ট বার্তা, আলোচনার মাধ্যমে আর সমাধান নয়। তারই ঝলক দেখা দিল আন্তর্জাতিক আদালতেও। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দীপক মিত্তলের এমন আচরণ কিন্তু নতুন নয়। ২০১৭ সালে এই আন্তর্জাতিক আদালতেই দক্ষিণ এশিয়া এবং সার্ক গোষ্ঠী বিষয়ক পাক ডিজি মহম্মদ ফয়জলের করমর্দনকেও প্রত্যাখ্যান করেছিলেন দীপক মিত্তল। ওই সময়ও ‘নমস্কার’ করে পাল্টা অভিবাদন জানান তিনি।
সে সময় কুলভূষণ মামলা ছাড়াও ২ জওয়ানের নারকীয় খুনের ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে কূটনৈতিকভাবে সব ধরনের পদক্ষেপ করে ভারত। কুলভূষণ যাদব মামলার শুনানি শুরু হয়েছে নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই চাঁচাছোলা ভাষায় সওয়াল শুরু করেন ভারতের তরফে আইনজীবী হরিশ সালভে। এ দিন তার সওয়ালে হরিশ সালভে বলেন, ভারতীয় দূতাবাসকে অনুমতি না দিয়ে দীর্ঘদিন বন্দি করে রাখা হয়েছে কুলভূষণ যাদবকে। যা ভিয়েনা কনভেশনের আইন গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে দাবি হরিশ সালভের। এমনকি ভারতের তরফে অভিযোগ করা হয়, কুলভূষণকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবহার করছে পাকিস্তান। ২০১৬ সালে ৩০ মার্চ যাদবের ‘কনসুলার অ্যাকসেস’র অনুমোদন চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়।
কিন্তু পাকিস্তানের তরফে তার কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। হরিশ সালভে বলেন, বিভিন্ন সময়ে ১৩ বার ভারতীয় দূতাবাসের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতের চরবৃত্তি এবং সন্ত্রাস ছড়ানোর সন্দেহে ২০১৭ সালে ১০ এপ্রিল কুলভূষণকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা শোনায় পাক সামরিক আদালত। ভারতের এই প্রাক্তন বায়ুসেনাকে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে বালুচিস্তান থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে দাবি পাকিস্তানের। যদিও, ইরান থেকে কূলভূষণকে পাকিস্তান অপহরণ করে বলে অভিযোগ আনে ভারত। কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে দ্বারস্থ হয় নয়া দিল্লি। এরপরই পাক আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করে আন্তর্জাতিক আদালত।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।