ভারতের গোটা কয়েক রাজ্যের বেশ কিছু শহরে গত বছর বিশেষ বিশেষ কিছু অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে, শহরগুলোর নাম শুনলেই এখন ভয়ে আঁতকে ওঠে মানুষ। কোন শহর কেন কুখ্যাত, কোথায় কোন কোন অপকর্ম বেশি- চোখ বন্ধ করে তা বলে দিতে পারেন প্রায় সব ভারতীয়ই। সম্প্রতি দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ইন্ডিয়া টুডে।
গাড়ি চুরি: উত্তর প্রদেশের মীরাট ও মুজফফরনগরের সঙ্গে বানের জলের মতো হুহু করে বাড়ছে গাড়ি চুরির ঘটনা। শুধু এই দুই শহরেই যে চুরি হচ্ছে তা নয়। উত্তর ভারতের অন্যান্য শহরেও হরদম চুরি করে বেড়াচ্ছে এখানকার গাড়িচোর বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি ভারতের গাড়ি চুরি ঘটনার তদন্ত থেকে উঠে এসেছে এই দুই শহরের দাগী আসামিদের নাম।
খুন: মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে খুনের ঘটনা রমরমিয়ে চলে উত্তর প্রদেশের ইটাওয়া ও বুলন্দশহর অঞ্চলে। গত কয়েক বছরে এই দুই শহরের সঙ্গে বিহারের বেগুসারাই শহরে পাল্ল দিয়ে বেড়েছে খুনের ঘটনা। ভারতের জাতীয় অপরাধ ব্যুরোর এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
পরিচয়পত্র জালিয়াতি: ভোটার কার্ড বা ‘আধার’ জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির ঘটনা কয়েক বছরে মারাত্মক হারে বেড়েছে। অপরাধ ব্যুরোর সাইবার ক্রাইম বিভাগ জানাচ্ছে, এমন অপরাধের হারে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণের শহর হায়দরাবাদ।
লুট ও ডাকাতি: মধ্য প্রদেশ ও রাজস্থানের বিভিন্ন অঞ্চল লুটপাটের জন্য কুখ্যাত। লুটতরাজ এখানকার নিত্যদিনের ঘটনা। মুখরোচক গল্প। যেখানে-সেখানে হরহামেশাই ঘটে এ দৌরাত্ম্য। হাইওয়ে পুলিশের তথ্যে, বড় রাস্তা সংলগ্ন বসতিহীন অঞ্চলগুলোই অপরাধীদের নজরে থাকে বেশি।
‘আইটি ফ্রড’: ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আরেক নতুন ধরনের অপরাধ। আইটি ফ্রড বা তথ্যপ্রযুক্তির দুর্নীতি। আর এই নয়া অপরাধের রাজধানী হল বেঙ্গালুরু। যেখানে রয়েছে বিশ্বের তাবড় তাবড় সব তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার দফতর।
ধর্ষণ: নির্ভয়া হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই রাজধানী দিল্লি গায়ে সেঁটে বসেছে ‘ধর্ষণ রাজধানী’র তকমা। যদিও এই দাবির সত্যতা যাচাই করার মতো কোনো তথ্য নেই, তবু দিল্লি এখন এ নামেই কুখ্যাত। সকাল-সন্ধ্যা, রাত-দুপুর কোনো সময়ই নিরাপদ নয় সেখানকার নারীরা- সবসময় চলে ধর্ষণ।
গুম-অপহরণ: বেশ কয়েক দশক ধরে চলে আসা গুমের প্রবণতা এখনও ভারতের রাজ্য বিহারের পিছু ছাড়েনি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাজনিত কারণেই সেখানে বেশির ভাগ গুমের ঘটনা হয় বলে মনে করেন দেশটির অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।
কয়লা মাফিয়া: কয়লা খনির জন্য বিখ্যাত ঝাড়খন্ডের আরেক নাম ‘মাফিয়া খন্ড’। দুর্ধর্ষ সব মাফিয়া চক্রের আনাগোনা এই কয়লা মুল্লুকে। খুন-ধর্ষণ এখানে ছেলেখেলা, পুতুল খেলার মতো মামুলি কারবার।
বন্যপ্রাণীর চোরাশিকার ও পাচার: উত্তরাখনন্ড-বন্যপ্রাণীদের অভয়ারণ্য। বর্তমানে বন্যপ্রাণীদের চোরাশিকার ও পাচারের একাধিক চক্র? বাঘ, চিতাবাঘ ছাড়াও নানা রকমের পাখির চোরাপাচার হয় সেখান থেকে।
মাদক বাজার: হিমাচল প্রদেশের কুলু ও মানালি অঞ্চলে রয়েছে মাদক-পর্যটনের ব্যাপক প্রচলন। বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে রয়েছে এই অঞ্চলে আসার ঝোঁক। যার কারণ এই অঞ্চলে ব্যাপক হারে গাঁজা, আফিম ও চরসের উৎপাদন।
নকল: পরীক্ষায় নকল করার জন্য বিহারের বদনাম রয়েছে কয়েক দশক ধরে। এতটাই গভীরে এই নকলের ধারা যে বেশ কয়েক বার সারা রাজ্যে প্রথম হওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধেও পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ ওঠে ও শিক্ষার্থীরা দোষীও সাব্যস্ত হয়।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।