বরগুনায় অচাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় কিছুক্ষণের মধ্যে ঘোষণা করবেন।বেলা একটায় বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান আদালতে রায় পড়া শুরু করেন।এ মামলায় কারাগারে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক আট আসামিকে বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে আদালতের এজলাসে উঠানো হয়।এর আগে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে র্যাব ও পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় প্রিজনভ্যানে আসামিদের আদালতে নিয়ে আসা হয়।সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সাদা পোশাকে বাবার গাড়িতে মিন্নি আদালতে হাজির হন।মামলার অন্যতম আসামি মুসা বন্ড হত্যার পর থেকে এখনো পলাতক রয়েছেন।
রায় শুরুর আগ পর্যন্ত আদালতের বারান্দার রাখা স্টিলের সোফায় বসে ছিলেন।রায়ের আগে খুবই শান্ত ও ধীর ছিলেন মিন্নি।তবে কিছুটা উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল তাকে।দীর্ঘসময় আদালতের বারান্দায় বসে থাকলেও কারও সাথে কোন কথা বলতে দেখা যায়নি।তবে তার বাবা মোজাম্মেল হক ছিলেন কিছুটা নির্ভার।তাকে উদ্বিগ্ন দেখা গেলেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলতে দেখা গেছে।রায় উপলক্ষে আদালতে ও এজলাস কক্ষে ছিল কড়া নিরাপত্তা।মাত্র ৩ জন সাংবাদিককে এজলাসে ঢুকার অনুমতি দেওয়া হয়।এছাড়া আসামিপক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষের পিপি ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়। মিন্নির বাবাকেও এজলাসের বাইরে বসে থাকতে দেখা যায়।স্থানীয় আইনজীবীদেরও আদালতের বারান্দার বসে থাকতে দেখা যায়।
রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামি হলেন- রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯), মো. মুসা (২২), আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সায়মুন (২১)। গত বছরের ২ জুলাই রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড (২৫) পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুভাগে বিভক্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় পুলিশ।চলতি বছরের ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণ হয়।
প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে জামিনে আছেন নিহত রিফাতের স্ত্রী ও মামলার সাত নম্বর আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।আর ৬ নম্বর আসামি মো. মুসা পলাতক।অবশিষ্ট ৮ আসামি বর্তমানে বরগুনা জেলা কারাগারে।তারা রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।প্রসঙ্গত ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত করে। এরপর বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে। গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান।