প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:২৫
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘গণমাধ্যমের স্বনিয়ন্ত্রণ ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি ও জামায়াত ভাগ-ভাটোয়ারা করে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি অভিযোগ করেন, এই দখলদারিত্ব রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
তিনি বলেন, দেশের গণমাধ্যম এখনো ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত এবং জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে পারছে না। তার মতে, গণমাধ্যমকে গোষ্ঠীস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে এবং এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা অপরিহার্য।
মাহফুজ আলম বলেন, গণমাধ্যমকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করা সম্ভব নয় যতক্ষণ না সিভিল-মিলিটারি আমলাতন্ত্রকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করা যায়। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় কোনো বাধা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যম যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায় তবে প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতান্ত্রিক আচরণে ফিরতে হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া গণমাধ্যমের পেশাগত স্বাধীনতা টেকসই হবে না।
বৈঠকে বক্তারা অভিযোগ করেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময় গণমাধ্যমে যে অনিয়ম ও প্রভাব ছিল, অন্তর্বর্তী সরকার তা দূর করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বলেন, অনেক গণমাধ্যম সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের অবস্থান পাল্টে নেয়।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, সংবাদ প্রকাশে এজেন্সিগুলোর অযৌক্তিক নিয়ন্ত্রণ এখনো অব্যাহত রয়েছে। তারা উল্লেখ করেন, এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত মানদণ্ডের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।
বক্তারা বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে হলুদ সাংবাদিকতা হ্রাস পাবে এবং গণমাধ্যমের মানোন্নয়ন ঘটবে। তারা গণমাধ্যমের স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতা বাড়াতে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নয়নের পরামর্শ দেন।
বৈঠকে আরও উল্লেখ করা হয়, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত গণমাধ্যম গড়ে তোলার জন্য একটি শক্তিশালী স্বনিয়ন্ত্রণ কাঠামো তৈরি করা জরুরি। আলোচনায় বক্তারা একমত হন যে গণতন্ত্রের বিকাশে স্বাধীন গণমাধ্যম অপরিহার্য এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া তা সম্ভব নয়।