ফসলি জমিতে ইটভাটা, হুমকির মুখে আবাদ!

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো: তাসলিম উদ্দিন, উপজেলা প্রতিনিধি সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৪ই জানুয়ারী ২০২০ ১২:৫৬ অপরাহ্ন
ফসলি জমিতে ইটভাটা, হুমকির মুখে আবাদ!

নিয়ম নীতি না মেনেই সরাইলে ফসলি জমি দখল করে দিন দিন গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইট-ভাটা। বাস্তবে আইনের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে একশ্রেনীর প্রভাবশালী ও পয়সাওয়ালা ভাটার মালিকরা ইটভাটার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বেশির ভাগ ভাটায় নিয়ম নীতিমালা শুধু কাগজেই সীমাবদ্ধ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়ন ধরন্তি হাওর ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে ইটভাটা। এমনকি নেয়া হয়নি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের অনুমতি।ইটভাটা নির্মাণে আশপাশের কয়েকশ’ একর আবাদী জমির ফসল নষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। ধরন্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এক বছর আগে যেখানে ধান আবাদ হতো সেখানে এখন নির্মাণ করা হচ্ছে ইটভাটা।

শ্রমিকরা পুরোদমে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। নির্মিত ইটভাটার পাশের জমিতে চলছে বোরো রোপণ কার্যক্রম। ইটভাটা নির্মাণ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র নেয়নি ভাটা কর্তৃপক্ষ। এমনকি জেলা প্রশাসনের অনুমতিও নেয়নি। ইটভাটা নির্মাণে হুমকির মুখে পড়বে কয়েকশ’ একর আবাদী জমি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সরাইলে অবাধে গড়ে উঠছে ইটভাটা। এসব অনুমোদনহীন ইটভাটার কারণে পরিবেশ বিপর্যয় ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে একরের পর একর কৃষি জমি। 

এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় চালাইতেছে ইটভাটা । যেন দেখার কেউ নেই।জানা যায়, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ইটভাটা রয়েছে। কিছু ইটভাটার লাইসেন্স রয়েছে। বাকিগুলো নামকাওয়াস্তা আবেদন করেই অবৈধভাবে করছে ইটের ব্যবসা। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন। ফসলি জমি ও ঘনজনবসতিএলাকাগড়ে তুলেছে ইটভাটাগুলো।

ফলে একরের পর একর ফসলি জমির ক্ষতির পাশপাশি মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটেছে। জনবসতি এলাকায় গড়া তোলা ইটভাটার ধোঁয়ায় দেখা দিয়েছে শ্বাসকষ্ট, ফুঁসফুঁস, চর্ম, হাঁপানি, যক্ষ্মাসহ নানান রোগীর আধিক্য। স্থানীয়দের অভিযোগ ইটভাটার কারণে উৎপাদন হারিয়েছে আবাদিজমিসহ ফলফলাদির গাছ। তবে বৈধ কোনো কাগজপত্র ছাড়াই উপজেলার বহু ইটভাটার তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও প্রশাসন নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে। জনবসতিতে গড়ে তোলা অবৈধ ইটভাটা গুলোর অপসারণের দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, ইটভাটা নির্মাণের ফলে আমাদের ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। ভাটার সঙ্গে লাগানো রয়েছে কয়েকশ’ একর আবাদী জমি। যেখানে ধান ফসল ফলানো হয়। ইটভাটার কারণে আমরা বিপদে আছি। গতকাল উপজেলায় অনুষ্ঠিত আইন- শৃঙ্খলা সভায় অবৈধ ইটভাটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় বক্তারা জানান,আবাদী ও ফসলি জমি রক্ষায় অভিযান পরিচালনা জোরদার করে, যাতে আর কোন ফসলি জমিতে পুকুর বা মাঠি কাটতে না পারে সভা কে অভিহিত করেন।

ইনিউজ ৭১/এম.আর