প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৮:৩৩
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণা করার বিষয়ে হাইকোর্টের রুল জারির প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, তিনি নিজে এই পদবি নিতে চান না এবং সরকারেরও এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ফেসবুক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ গতকাল এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে রুল জারি করেছে, যেখানে জানতে চাওয়া হয়েছে কেন অধ্যাপক ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণা করা হবে না। সরকার এই রুলের জবাবের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে রিট আবেদনকারী নিজেই আবেদনটি করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং কেন এই নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। বিষয়টি এখন অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় পর্যবেক্ষণ করছে।
অন্যদিকে, একই রুলে আদালত জানতে চেয়েছে, জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ ও ওয়াসিমসহ অন্যান্য শহীদদের ‘জাতীয় বীর’ পদবি কেন দেয়া হবে না এবং তাদের প্রকৃত ও নির্ভরযোগ্য তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও আইন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সরকারের নজরে এসেছে যে, ‘জাতীয় সংস্কারক’ পদবির বিষয়ে আবেদনকারীর উদ্দেশ্য ও ভিত্তি পরিষ্কার নয়। তাই এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের আগে আইনগত ও প্রশাসনিক দিক থেকে বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘকালীন অবদান ও জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও তিনি নিজে কোনো বিশেষ সম্মানসূচক উপাধি গ্রহণ করতে আগ্রহী নন, যা সরকারের পক্ষ থেকে সম্মান করা হচ্ছে।
অতীতেও অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের সমাজ ও অর্থনীতির সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং জাতীয় সংস্কারের জন্য তার ভাবনা ও কার্যক্রম দেশের জন্য দৃষ্টান্ত স্বরূপ। তবে তার সম্মানসূচক পদবির ব্যাপারে আইনগত ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে চলমান বিতর্ক ও আলোচনা রয়েছে, যা আদালতেও উপস্থিত হয়েছে।
সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখন আদালতের নির্দেশনামাফিক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে এবং আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের উত্তর দেবে। এই বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া ও জনগণের ভাবনা একসঙ্গে বিবেচনার মাধ্যমে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।