প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৩
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন। ঢাকায় সোমবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। সাক্ষাতে তিনি বাংলাদেশের আর্থিক খাত সংস্কারে ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং সরকার গৃহীত সংস্কারমূলক কর্মসূচির প্রতি বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
জুট বলেন, আপনি এবং আপনার টিম দুর্দান্ত কাজ করছেন। আমরা বাংলাদেশি জনগণের স্বপ্নের অংশ হতে চাই। তিনি ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনের সময়কালের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে বলেন, এ দেশ তার হৃদয়ের খুব কাছাকাছি। সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভূটানের ডিরেক্টর জ্যাঁ পেসমে এবং প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
সাক্ষাতে ইউনূস বলেন, আমরা যখন সরকার গঠন করি, তখন পরিস্থিতি ছিল যেন ভূমিকম্প পরবর্তী ধ্বংসস্তূপ। কোনও অভিজ্ঞতা না থাকলেও উন্নয়ন সহযোগীরা আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। তিনি বলেন, গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের ভূমিকাই আমাদের জাতিকে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের তরুণরাই দেশের কেন্দ্রবিন্দু, বিশেষ করে নারী সমাজের অংশগ্রহণ ছিল ঐতিহাসিক। তাই আমরা এই জুলাইকে নারী দিবস হিসেবে পালন করছি। তরুণদের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেওয়াই আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বব্যাংককে আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ যেন কেবল একটি ভৌগোলিক সীমানা নয়, বরং একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। তিনি বলেন, সমুদ্রবন্দর ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন আমাদের শিল্প প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
লুৎফে সিদ্দিকী জানান, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের নতুন পরিচালন ব্যবস্থায় কনটেইনার হ্যান্ডলিং উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে নিট বৈদেশিক বিনিয়োগে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
জোহানেস জুট নারীর ক্ষমতায়নে ইউনূসের অবদানের প্রশংসা করে বলেন, বিশ্বব্যাংক আগেও বাংলাদেশে মেয়েদের শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্পে সহায়তা করেছে এবং ভবিষ্যতেও তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, বিশ্বব্যাংক গত অর্থবছরে বাংলাদেশে তিন বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করেছে এবং আগামী তিন বছরেও একই সহায়তা অব্যাহত থাকবে।