প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৬:০
নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি ১৪৪টি দল। এসব দলের আবেদনে বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়ায় তাদের সংশোধনের সুযোগ দিতে যাচ্ছে ইসি। মঙ্গলবার কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ গণমাধ্যমকে জানান, প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে চিঠি দেওয়া হবে এবং বাকি দলগুলোকে পরে চিঠি পাঠানো হবে। প্রতিটি দলকে ১৫ দিনের মধ্যে তাদের আবেদনের ঘাটতি পূরণ করতে হবে। এর আগে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা নির্ধারণ করে ইসি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। পরে তা ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয় এবং এই সময়ে ১৪৪টি দল ১৪৭টি আবেদন জমা দেয়।
কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দলগুলোর মধ্যে কেউই প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। আইনের আওতায় নিবন্ধনের জন্য একটি দলকে কেন্দ্রীয় কমিটি, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি গঠন করতে হয়, যার প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে ২০০ জন ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এর বাইরে অতীতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া বা পূর্বের নির্বাচনে ন্যূনতম পাঁচ শতাংশ ভোট পাওয়াও বিবেচ্য শর্ত।
আবেদন প্রাপ্তির পর ইসি প্রথমে প্রাথমিকভাবে সেগুলো যাচাই করে এবং পরবর্তী ধাপে মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে। তদন্ত শেষে দাবী ও আপত্তির সুযোগ রেখে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আপত্তি থাকলে তা শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয় এবং সব শর্ত পূরণে সক্ষম হলে দলকে নিবন্ধন সনদ প্রদান করা হয়। নিবন্ধন না থাকলে কোনো দল নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না।
বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১টি, যদিও ২০০৮ সালে চালু হওয়া নিবন্ধন প্রথার পর ৫৫টি দল নিবন্ধন পেয়েছিল। শর্ত পূরণে ব্যর্থতা ও আদালতের নির্দেশে জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, পিডিপি, জাগপা ও ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। পরে আদালতের আদেশে জামায়াত ও জাগপা পুনরায় নিবন্ধন পেলেও ইসি কেবল জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহাল করেছে।
এই দলে রয়েছে বাংলাদেশ সংগ্রামী ভোটার পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), নতুন প্রজন্ম পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি, বাংলাদেশ নাগরিক দল, ন্যাশনাল ফ্রিডম পার্টি, কোয়ালিশন-ন্যাশনাল পার্টি, জাস্টিস ফর হিউম্যানিটি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদসহ একাধিক নতুন ও অজানা দল।
কমিশনের এমন সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় উঠেছে। একদিকে দলগুলোর নিবন্ধন পেতে সংগ্রাম, অন্যদিকে ইসির কঠোর মানদণ্ড ও যাচাই প্রক্রিয়া—দুইয়ের দ্বন্দ্বে আগামী দিনের রাজনীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত স্পষ্ট।