প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৫
‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বাণীতে বলেছেন, বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় যুবদের জনসম্পদে রূপান্তর এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি জানান, এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে। সোমবার (১৪ জুলাই) দেওয়া ওই বাণীতে ড. ইউনূস বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত ১৫ জুলাই ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ উদযাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে যুবদের দক্ষতা উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরা হচ্ছে, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হলে এবং আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে হলে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা অপরিহার্য। বিশেষ করে প্রযুক্তিনির্ভর বর্তমান বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী আধুনিক দক্ষতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া জরুরি। এজন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল দক্ষতার বিকাশ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তিনি এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল দক্ষতার মাধ্যমে যুবদের ক্ষমতায়ন’ কে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশ ও বিদেশের শ্রমবাজারের বিশাল সুযোগ কাজে লাগাতে সরকার স্থানীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, প্রযুক্তি ব্যবহার এবং প্রশিক্ষকদের মানোন্নয়নের মতো পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) সরকারি ও বেসরকারি অংশীজনদের নিয়ে একটি দক্ষতা উন্নয়ন ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে কাজ করছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে শ্রমবাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।
ড. ইউনূস আশা প্রকাশ করেন, যুবদের মধ্যে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার মানসিকতা গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদেরকে পরিবর্তনশীল শ্রমবাজারের জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলা সম্ভব হলে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি আরও ত্বরান্বিত হবে। তিনি বলেন, একটি আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশ গঠনে যুবসমাজের দক্ষতা বৃদ্ধির কোনও বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, আমাদের যুব সমাজকে শুধু চাকরির পেছনে ছুটে বেড়ানোর জন্য নয়, বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য কারিগরি ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণের সুযোগ সম্প্রসারণ জরুরি। এ প্রসঙ্গে তিনি শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে দক্ষতা উন্নয়নের কার্যক্রম সমন্বয়ের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
ড. ইউনূস বলেন, একটি আত্মনির্ভরশীল, উদ্ভাবনী এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণে যুবদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। তাই তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সামাজিক, শিক্ষাগত ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার এ লক্ষ্যে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আশা করেন, ২০২৫ সালের ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ দেশব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টি করবে এবং যুবদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। তিনি দিবসটি উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন এবং দেশের প্রতিটি যুবকের মধ্যে দক্ষতা উন্নয়নের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
সবশেষে প্রধান উপদেষ্টা পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, দক্ষতা উন্নয়নকে জাতীয় অগ্রাধিকারের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে এবং যুবসমাজকে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের অন্যতম চালিকাশক্তিতে রূপান্তর করতে হবে। তিনি যুবদের জন্য এক নতুন, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন ভবিষ্যতের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।