করোনা মহামারি নেতিবাচক প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে গরিব ও অস্বচ্ছল পরিবারগুলোর তরুণদের ওপরে। ব্রিটেনের লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকসের এক গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে। খবর গার্ডিয়ানের।
‘করোনা মহামারির অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব’ শীর্ষক রেজল্যুশন ফাউন্ডেশন ও দি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের যৌথ উদ্যোগে প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, চাকরির বাজারে ধনী ও স্বচ্ছ্ল পরিবারগুলো থেকে আসা তরুণদের তুলনায় দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো থেকে আসা তরুণদের মধ্যে চাকরি ছাড়ার হার দ্বিগুণেরও বেশি।
এর ফলে ধনী ও দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা তরুণদের মধ্যে বেতন বৈষম্য আরও প্রকট হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক বৈষম্য বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
'দি ইকোনমি ২০৩০ ইনকোয়ার'র প্রকাশিত 'সোশ্যাল মবিলিটি ইন দ্য টাইম অব কভিড' প্রতিবেদনে দেখা যায়, করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগে থেকেই যারা চাকরি করছিল, এ ধরনের তরুণদের মধ্যে ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যকার সময়ে ২৫ বছরের কম বয়স্ক তরুণরা, ২৬ বছর বা তার ঊর্ধ্বে থাকা তরুণদের তুলনায় তিনগুণ বেশি চাকরি ছেড়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, দরিদ্র পরিবারগুলোর মধ্যে ৪১ শতাংশ তরুণ এ সময় চাকরি ছেড়েছে। অন্যদিকে ধনী পরিবারগুলোর মধ্যে মাত্র ১৬ শতাংশ তরুণ এ সময় চাকরি ছেড়েছে।
জরিপে আরও দেখা গেছে, গরিব পরিবারের তরুণদের মধ্যে যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো আছে বা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে এমন তরুণের সংখ্যা মহামারির আগে ৬৪ শতাংশের থেকে ৫৪ শতাংশে নেমে গেছে। পক্ষান্তরে ধনী পরিবারগুলোর তরুণদের আর্থিক নিরাপত্তা ৭৯ শতাংশ থেকে ৯৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
এ ব্যাপারে সেন্টার ফর ইকোনোমিক পারফরমেন্সের গবেষণা অর্থনীতিবিদ অ্যান্ড্রু আইলেস বলেন, মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাব তরুণদের উপর মারাত্মকভাবে পড়েছে। বিশেষ করে যারা কম ধনী বা দরিদ্র পরিবারগুলো থেকে এসেছে তারাই মূলত সংকটের কেন্দ্রে অবস্থান করছে।
তিনি আরও বলেন, মহামারির পর যারা আবার কাজে ফিরেছে তাদের পূর্বের ক্ষতি পূরণ করতে অনেক সময় লেগে যাবে। এর ফলে ব্রিটেনের সামাজিক সমতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ধনী-গরিব পরিবারগুলোর তরুণদের মধ্যকার বৈষম্য আরও বেশি হবে।
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে দরিদ্র পরিবারগুলোর কর্মজীবী বাবা মায়ের চাকরি হারানোর হার অপেক্ষাকৃত ধনী পরিবারের মা বাবাদের থেকে দ্বিগুণেরও বেশি। যার প্রভাবে গরিব পরিবারগুলোর আর্থিক নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে গেছে, যা এসব পরিবারের বাচ্চাদের স্কুলে উপস্থিতির হারের ওপর প্রভাব ফেলেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।