প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:২১
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে মৃতের সংখ্যা ৩৫০ ছাড়িয়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়ায় মারা গেছেন অন্তত ৩২৮ জন। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে বুনের, সোয়াত, মানসেহরা, বাজাউর এবং বাটাগ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে, তবে পরিস্থিতি খুবই চ্যালেঞ্জিং।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বুনের জেলার বেশন্ত্রি গ্রামে বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে দাফন-জানাজার কাজও প্রায় থমকে গিয়েছিল। পাশের গ্রামের মানুষ এসে সহায়তা করেছেন। প্রত্যেক পরিবারের কাছে হতাহতের খবর পৌঁছেছে।
গিলগিট বালতিস্তানে ১২ জন এবং আজাদ কাশ্মীরে ১১ জন মারা গেছেন। প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বুনের, সোয়াত, বাজাউর, তোরঘর, মানসেহরা, শাংলা ও বটগ্রাম।
উদ্ধারকারী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শুধু বুনের জেলার বেশন্ত্রি গ্রামেই হাজারো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরবাড়ি ধ্বংস, রাস্তা ভেঙে গেছে এবং মানুষের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নেই। উদ্ধারকর্মীরা রাতের অন্ধকার ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার মধ্যেও কাজ চালাচ্ছেন। হাসপাতালে মৃতদেহ ও আহতদের সংখ্যা বেড়ে চরম সংকট তৈরি হয়েছে।
প্রাদেশিক সরকার ইতোমধ্যেই জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর জন্য ৫০ কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে শুধু বুনের জেলার জন্য বরাদ্দ ১৫ কোটি রুপি। দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে।
প্রাদেশিক উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, প্রায় ২ হাজার উদ্ধারকর্মী ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার এবং নয়টি ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়োজিত রয়েছেন। তারা রাতদিন চেষ্টা চালাচ্ছেন যাতে যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য পৌঁছানো যায়।
বর্তমানে এলাকায় জরুরি ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম চলমান, এবং প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আরও সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা করছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আরও বিস্তৃত ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।