প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১১:১১
গ্রীষ্মকালে শরীরের ভেতরে নানা পরিবর্তন ঘটে, যার প্রভাব পড়ে লিভারেও। বিশেষ করে ফ্যাটি লিভার সমস্যায় যারা ভুগছেন বা ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তাদের জন্য খাদ্যাভ্যাসে কিছু সচেতন পরিবর্তন আনা জরুরি হয়ে পড়ে। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, লিভার ভালো রাখতে গেলে কেবল খাবারের ধরন নয়, রান্নার তেল বেছে নেওয়ার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো অয়েল, ফ্ল্যাক্সসিড অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল ও নারকেল তেল—এই পাঁচ ধরনের তেল ফ্যাটি লিভার কমাতে সহায়ক। এ তেলগুলোতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে, যা শরীরে উপকারী কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং ক্ষতিকর ফ্যাট জমতে দেয় না। ফলে লিভারে চর্বি জমার প্রবণতা হ্রাস পায়।
তবে কেবল তেল পরিবর্তন করলেই চলবে না। গ্রীষ্মের এই সময়ে কিছু খাবার শরীরে অতিরিক্ত তাপ ও প্রদাহ তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত, ভাজাপোড়া ও প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীরের বিপাকক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটায়। এগুলো এড়িয়ে চলা দরকার, বিশেষত যাদের লিভার নিয়ে আগে থেকেই সমস্যা রয়েছে।
রান্নার তেল ব্যবহারে ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন একই ধরনের তেল ব্যবহার না করে সপ্তাহে একাধিক স্বাস্থ্যকর তেলের মিশ্রণও ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে শরীর পায় ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর।
নারকেল তেল বিশেষ করে দ্রুত হজমে সাহায্য করে এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদানে ভরপুর। ফ্ল্যাক্সসিড অয়েল ও অ্যাভোকাডো অয়েলও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ, যা লিভারের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
অন্যদিকে, অনেকেই বাজারের রিফাইন্ড তেল বা অতিরিক্ত হাইড্রোজেনেটেড তেল ব্যবহার করেন, যা দীর্ঘমেয়াদে লিভারের ক্ষতি করতে পারে। এই তেলগুলো শরীরে ট্রান্স ফ্যাট বাড়ায়, যা প্রদাহ ও ফ্যাটি লিভারের অন্যতম কারণ।
ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত হাঁটা এবং মেটাবলিজম ঠিক রাখার মতো অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। একমাত্র সচেতনতাই পারে এই নীরব ঘাতক থেকে আমাদের দূরে রাখতে।