প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৪৪
ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকরা জমির ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের মটর শ্রমিক মালিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকরা জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে কালীগঞ্জ ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাজী মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রকল্পে অধিগ্রহণকৃত জমির বর্তমান বাজারমূল্য প্রতি শতক ৫ লাখ টাকা হলেও মালিকদের দেওয়া হচ্ছে মাত্র ১৮’শ টাকা। অনেক মৌজার জমি বাণিজ্যিক শ্রেণিতে থাকলেও তা ডোবা বা ডাঙ্গা হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জমি অধিগ্রহণে ৮ ধারা নোটিশ জারির আগে ৭ ধারা নোটিশ জারি হলেও স্থানীয় মালিকদের সঙ্গে কোনো সমন্বয় বা শুনানি হয়নি। ফলে প্রায় চার হাজার জায়গার মালিক প্রকৃত মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। তাদের দাবি, পুনরায় সার্ভে করে স্থাপনা ও জমির ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করা হোক।
প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছেন, তাদের অনৈতিকভাবে কম মূল্য প্রদানের ফলে তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। একাধিক মালিক উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, একই শ্রেণীর জমি থেকে প্রভাবশালী ব্যক্তি চারগুণ বেশি অর্থ পাচ্ছেন, সাধারণ মালিকরা পাচ্ছেন কম।
সংবাদ সম্মেলনে কিছু মালিক হুমকি দিয়েছেন, ন্যায্য মূল্য না পাওয়া গেলে তারা হরতাল, অবরোধ বা আত্মহত্যার মতো চরম পদক্ষেপ নেবেন। দুলাল মুন্দিয়া গ্রামের মামুনুর রহমান রানা জানান, তার জমির মৌজা রেট ৭৭ হাজার ২১৮ টাকা হলেও জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া হয়েছে মাত্র চার হাজার ২২৭ টাকা। বাবুল আক্তার জানান, তার বাণিজ্যিক জমি ডাঙ্গা হিসেবে মূল্যায়ন না হয়ে কম দামে দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতরা সাবেক জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম এবং ভারতে নিহত এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের কারণে এই অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাদের অভিযোগ, এই ধরনের ঘাপলাবাজির কারণে সাধারণ জমির মালিকেরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত মালিকরা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন, অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে দ্রুত প্রদান করা হোক, নাহলে কঠোর আন্দোলনের পথে যাওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না।