প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১০:১৭
মানুষ দুনিয়ায় ধন-সম্পদ অর্জনের পেছনে সব সময় ছুটে চলে। কেউ অর্থ, কেউ ক্ষমতা, আবার কেউ সামাজিক মর্যাদা অর্জনকে জীবনের মূল লক্ষ্য বানিয়ে ফেলে। কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায়, প্রকৃত সম্পদ হলো আল্লাহর ভয় বা তাকওয়া। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ধন-সম্পদ হলো প্রচুর জিনিসপত্র নয়, বরং ধন-সম্পদ হলো অন্তরের সমৃদ্ধি।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)
অন্তরের এই সমৃদ্ধি হলো সেই তৃপ্তি, যা আল্লাহর উপর ভরসা করলে আসে। একজন মুত্তাকি ব্যক্তি দুনিয়ার ছোট বড় ঝড়ঝাপটায় বিচলিত হয় না। তার হৃদয় শান্ত থাকে, কারণ সে জানে, সবকিছু আল্লাহর হাতে। এই ভরসাই তাকে প্রকৃত অর্থে ধনী বানায়।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, “যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য মুক্তির পথ বের করে দেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।” (সুরা আত-তালাক, ২-৩)। অর্থাৎ তাকওয়াই মানুষের জীবনে শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধির দ্বার খুলে দেয়।
আমরা প্রায়ই দেখি, প্রচুর সম্পদশালী মানুষও অশান্তিতে ভোগে, দুশ্চিন্তায় রাত কাটায়। আবার অনেক দরিদ্র মানুষ হাসিমুখে দিন কাটায়, অন্তরে প্রশান্তি খুঁজে পায়। এর মূল রহস্য হলো তাকওয়া। যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে জীবনযাপন করে, তার জন্য ছোট সম্পদও বড় সুখ এনে দেয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) আরেকটি হাদিসে বলেছেন, “যার সকাল-সন্ধ্যা খাদ্য আছে, শরীর সুস্থ আছে এবং আজকের জন্য মাথার ওপরে ছাদ আছে, তার জন্য দুনিয়ার সবকিছুই পূর্ণ হয়ে গেছে।” (তিরমিজি)। এই হাদিস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আসল সুখ হলো সহজ জীবনে সন্তুষ্টি।
আজকের সমাজে অর্থের পেছনে অন্ধ প্রতিযোগিতা মানুষকে হিংসা, বিদ্বেষ ও অন্যায়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ আল্লাহর ভয় যদি অন্তরে থাকে, তবে সামান্য সম্পদেও শান্তির জীবন যাপন করা যায়।
তাই মুসলমান হিসেবে আমাদের দোয়া হওয়া উচিত, আল্লাহ যেন আমাদের অন্তরকে তাকওয়া দিয়ে পরিপূর্ণ করেন, আমাদের অন্তরের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করেন। কারণ তাকওয়াই হলো সেই সম্পদ, যা কখনো ফুরিয়ে যায় না।
পরিশেষে বলা যায়, দুনিয়ার ধন-সম্পদ নয়, বরং অন্তরের তাকওয়াই মানুষের প্রকৃত সম্পদ। আর এই সম্পদ অর্জন করাই আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।