প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১৭:৭
নাশকতার আশঙ্কায় পুলিশের নজরদারিতে আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দেশে সম্ভাব্য নাশকতার ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, দলটি আত্মগোপনে থেকেই ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করতে পারে। রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে নাশকতার পরিকল্পনার ইঙ্গিত পাওয়ায় পুলিশ মাঠপর্যায়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেশের রেঞ্জ ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপারদের এ বিষয়ে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ বা এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দেখামাত্র গ্রেফতারের নির্দেশনা ইতোমধ্যেই কার্যকর করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে যারা দলে সক্রিয় ছিলেন বা পুনর্গঠনের চেষ্টা করছিলেন, তাদের চিহ্নিত করে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক জানান, নিষিদ্ধ সংগঠনটি কোনোভাবেই পুলিশের আওতাভুক্ত এলাকায় কার্যক্রম চালাতে পারবে না। যদি কেউ এমন চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি পুলিশের কেউ যদি নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রতি নমনীয়তা দেখায়, তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এসএন নজরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের মতো সংগঠনগুলো প্রকাশ্যে বা গোপনে কোনো ধরনের তৎপরতা চালাতে পারবে না। যেকোনো ধরনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং হবে। এমনকি সাইবার জগতেও তাদের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে।
গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী গোপন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ঝটিকা মিছিল ও অনলাইনে সংগঠিত কর্মকাণ্ডের জন্য অনেকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। তাদের তালিকা অনুযায়ী গ্রেফতার অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে।
সাইবার প্যাট্রোলিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে সন্দেহজনক কার্যক্রম নজরদারিতে আনা হয়েছে। বিশেষ করে যারা ফেসবুক, ইউটিউব বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী বা সহিংস বার্তা প্রচার করছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চব্বিশের গণহত্যা মামলার আসামিদের ধরতেও প্রতিদিন অভিযান চলছে। পুলিশের মিডিয়া বিভাগের ডিসি জানান, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ইউনিট নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যেকোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে। রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনায় না নিয়ে, আইনের চোখে অপরাধী যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন কঠোর অবস্থানের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা বাড়লেও রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে।