প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২৫, ১১:৩
জুলাই গণহত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির দ্বিতীয় দিন আজ সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই শুনানি পরিচালনা করবেন। মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, যাদের বিরুদ্ধেও একইসঙ্গে অভিযোগ গঠনের শুনানি চলছে।
ইতোমধ্যে মামলাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং সোমবার সকালে প্রিজন ভ্যানে করে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পূর্বে আদালত চত্বরে কড়া নজরদারি লক্ষ্য করা গেছে। এ মামলার গুরুত্ব ও বিতর্কিত চরিত্রের কারণে সংবাদমাধ্যম ও জনসাধারণের নজর এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দিকে।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই মামলার প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম অভিযোগপত্র পাঠ করেন এবং বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। ওইদিন আসামিপক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনও উপস্থিত থেকে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। শুনানিটি বিটিভিসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়, যা এই মামলাটির গুরুত্ব ও জনগণের আগ্রহ প্রতিফলিত করে।
মামলার ধারাবাহিকতায় দেখা যায়, গত ১ জুন ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেয়। আদালতে এসব অভিযোগ পাঠ করেন প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, আব্দুস সোবহান তরফদার ও মিজানুল ইসলাম। আদালতের নির্দেশে তদন্ত সংস্থা গত ১২ মে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে, যেখানে তাকে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল ১৮ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেয় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের তাগিদ দেয়। মামলাটি বিচারিক প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপে প্রবেশ করেছে এবং এর পরবর্তী দিকনির্দেশনা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
অন্যদিকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আরেকটি মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসে শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়। সে মামলার তদন্ত এখনো চলমান, যা এই মামলার সাথে পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের সময় বিক্ষোভ দমনে নির্বিচারে গুলি চালানো, হত্যার নির্দেশ ও পরিকল্পনার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। এতে প্রায় দেড় হাজার মানুষের প্রাণহানির অভিযোগ রয়েছে, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ঘটনা হিসেবে বিবেচিত।