প্রকাশ: ৯ জুলাই ২০২৫, ১৩:১৬
দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে বরখাস্ত হওয়া উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন চাকরি ফিরে পাচ্ছেন হাইকোর্টের রায়ে। বুধবার হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এক রায়ে তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তার বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য সুবিধাও পরিশোধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় শরীফ উদ্দিন বলেন, আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি, যা আমার দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের স্বীকৃতি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তাকে শুধুমাত্র ৯০ দিনের বেতন ও কিছু নির্ধারিত সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়, যা পরে বিতর্ক ও আলোচনা সৃষ্টি করে।
চট্টগ্রাম অফিসে কর্মরত অবস্থায় মো. শরীফ উদ্দিন একাধিক আলোচিত দুর্নীতি মামলার তদন্তে যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে ছিল। এতে তিনি চাপে পড়েন এবং অভিযোগ ওঠে, প্রভাবশালীদের অসন্তুষ্ট করায় তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বরখাস্ত করা হয়। ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আইয়ুব খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শরীফ উদ্দিন। সিসিটিভি ফুটেজসহ থানায় দায়ের করা এই অভিযোগ নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়।
শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোড়ন তোলে এবং সুশীল সমাজ ও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকেই তার বরখাস্তকে সত্য প্রকাশে কাজ করা একজন সরকারি কর্মকর্তার প্রতি প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করেন।
এখন হাইকোর্টের রায়ে শরীফ উদ্দিনের চাকরিতে ফিরে যাওয়া কেবল তার ব্যক্তিগত বিজয় নয়, বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করা সব সরকারি কর্মচারীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আদালতের এই রায়ের ফলে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে সাহসী কর্মকর্তারা পুনরায় আশাবাদী হতে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন।
দুদকের এই অপসারণ সিদ্ধান্তকে আদালত যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করার কারণে বাতিল ঘোষণা করেছেন বলে জানা গেছে। হাইকোর্টের রায় দেশের আইনি ও প্রশাসনিক ইতিহাসে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করল যেখানে সত্য ও সাহসিকতার পাশে দাঁড়িয়েছে বিচার বিভাগ।