প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১৭:০
পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে নিজ সন্তানদের দুধে বিষ মিশিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। নৃশংস এ ঘটনায় নিহত হয়েছে ৮ মাসের মেয়ে মার্সিয়া, আড়াই বছর বয়সী ছেলে নোয়েল এবং চার বছরের মেয়ে মানসা। হত্যাকাণ্ডের সময় শিশুরা তাদের মায়ের সামনে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল। কিন্তু চাঞ্চল্যকর হলেও শেষ পর্যন্ত শাস্তি পেতে হচ্ছে না মা জোনাইরা বিবিকে, কারণ শিশুর পিতা সালিম মাসিহ আদালতে মামলা তুলে নিয়ে স্ত্রীকে ক্ষমা করেছেন।
স্থানীয় থানায় এফআইআর করার পর জোনাইরা আদিয়ালা কারাগারে আটক ছিলেন। তবে হত্যাকাণ্ডের মাত্র ২৩ দিন পর সালিম মাসিহ নিজের মন পরিবর্তন করেন এবং আদালতে একটি নোটারাইজড হলফনামা জমা দিয়ে স্ত্রীকে ক্ষমা করেন। তিনি মামলাটি আর এগিয়ে নিতে চান না বলে জানান। এই পুনর্মিলন চুক্তির কারণে আদালত অভিযুক্তকে খালাস দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য রায় সংরক্ষণ করেছে। আগামী ১৯ জুলাই রায় ঘোষণার কথা।
আদালতের কার্যক্রম চলাকালীন উভয় পক্ষের আইনজীবী পুনর্মিলন বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং জানান অভিযোগকারী পক্ষ আর বিচার চলিয়ে যেতে চায় না। সালিম মাসিহের এই সিদ্ধান্ত বিভিন্ন দিক থেকে সামাজিক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই মনে করেন, এই ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য যথাযথ শাস্তি হওয়া জরুরি, তবে পারিবারিক পুনর্মিলনের কারণে বিচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জোনাইরা বিবি ও তার স্বামীর পারিবারিক বিরোধ থেকেই এ নৃশংস ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। হত্যাকাণ্ডের পেছনে পারিবারিক চাপ ও বিবাদের প্রভাব ছিল উল্লেখযোগ্য। এর আগেও বিভিন্ন দেশে পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে শিশু নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ পেয়ে আসছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে শিশুর নিরাপত্তা ও পারিবারিক হিংসার বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি জোরদার হয়েছে। সমাজের সকল স্তর থেকে শিশু অধিকার সংরক্ষণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আলাদা উদ্যোগ গ্রহণের দাবি উঠেছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিচ্ছে। শিশুরা যেন সুরক্ষিত পরিবেশে বড় হতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।