বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের সাবেক মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
চিন্ময়ের পক্ষে আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য আদালতকে জানান, তার মক্কেল অসুস্থ এবং দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আবদুল বাসেত শুনানিতে অংশ নেন।
এই মামলার ইতিহাস বেশ জটিল। গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় চিন্ময়সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী ছিলেন তৎকালীন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান, যাকে পরে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
গত ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করেছিলেন। এরপর হাইকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করা হয়। গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছিল, চিন্ময়কে কেন জামিন দেওয়া হবে না।
মামলাটির সঙ্গে জড়িত রয়েছে গত বছরের ২৬ নভেম্বরের একটি করুণ ঘটনা। চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত হন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের কার্যক্রম কিছুদিন স্থগিত ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদ উদ্দিন খান আদালতকে জানান, তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে কিছু হালনাগাদ তথ্য দাখিলের জন্য তাদের আরও সময় প্রয়োজন। আদালত তাদের এই আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির জন্য ৩০ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন।
চিন্ময়ের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য তার ক্লায়েন্টের অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে জামিনের পক্ষে জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, তার মক্কেল দীর্ঘদিন ধরে আটক রয়েন এবং মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।
এই রায়ে হাইকোর্ট চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে জামিন প্রদান করেন, তবে কিছু শর্তারোপ করেন। আদালত তাকে দেশত্যাগ না করা এবং প্রয়োজন হলে তদন্ত কর্মকর্তাদের সহায়তা করার নির্দেশনা দেন।
মামলাটির পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী ১৫ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।