কুমিল্লায় সোমবার পৃথক দুটি বজ্রপাতে দুই কিশোর ও দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। ভয়াবহ এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় মুরাদনগর উপজেলার কোরবানপুর পূর্ব পাড়া কবরস্থান সংলগ্ন মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মারা যান দুই কৃষক। নিহতরা হলেন দেওড়া গ্রামের জুয়েল ভূঁইয়া (৩৫) ও কোরবানপুর গ্রামের নিখিল দেবনাথ (৬০)।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, স্থানীয়রা ঘটনার খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। নিখিল দেবনাথের প্রতিবেশী আব্দুল মান্নান বলেন, "হঠাৎ ভয়ানক বজ্রপাতের শব্দ শুনে আমরা দৌড়ে গেলে তাদের মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।"
দুপুরে বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা গ্রামে আরেকটি বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়। নিহত ফাহাদ হোসেন (১৩) ও সায়মন হোসেন (১৩) বড় হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, হালকা মেঘলা আকাশে ঘুড়ি উড়ানোর সময় আকস্মিক বজ্রপাতে তারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তাদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, "আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।"
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান জানান, বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, "আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কতা অনুযায়ী আমরা জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি জোরদার করব।"
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক বলেন, "এপ্রিল-মে মাসে বাংলাদেশে বজ্রপাতের ঘটনা বাড়ে। খোলা মাঠ, উঁচু গাছ ও জলাশয়ের কাছে থাকা বিপজ্জনক।"
স্থানীয়রা জানান, গত এক মাসে এ এলাকায় এটিই প্রথম বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা। তারা দ্রুত বজ্রপাত প্রতিরোধী আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. নুরুল ইসলাম বলেন, "বজ্রপাতের সময় উঁচু স্থান এড়িয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া উচিত। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু রাখব।"