আজহারুল ইসলামের আপিল শুনানি ৬ মে

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য আগামী ৬ মে দিন নির্ধারণ করেছে আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ওইদিন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানিটি হবে এবং আজহারের আপিল থাকবে কার্যতালিকার শীর্ষে।

এটিএম আজহারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী ও শিশির মনির। শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা, যার মধ্যে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের এবং অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল রয়েছেন।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালত আজহারের রিভিউ মঞ্জুর করে মূল আপিল শুনানির অনুমতি দেন। এটি ছিল মানবতাবিরোধী অপরাধ সংশ্লিষ্ট প্রথম কোনো মামলায় এমন সিদ্ধান্ত। একইসঙ্গে আসামিপক্ষকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

এর আগে ২৩ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রিভিউ আবেদন নিয়ে শুনানির দিন ধার্য করে আপিল বিভাগ। শুনানিতে রাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তারা বলেন, আজহারের রিভিউ আবেদনের শুনানি অত্যাবশ্যক।

২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর আপিল বিভাগ আজহারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে তাকে ফাঁসির আদেশ দেন।

মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ জনকে হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও নির্যাতনসহ ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করা হয় তাকে। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আজহারের পক্ষে ১১৩ যুক্তি তুলে ধরে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। আপিলে ৯০ পৃষ্ঠার মূল আবেদন এবং ২৩৪০ পৃষ্ঠার আলামতসহ নথিপত্র জমা দেওয়া হয়। জামায়াত এই রায়কে প্রহসন হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে।

এখন দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে কী সিদ্ধান্ত আসে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যেমন আলোচনা চলছে, তেমনি মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে এই শুনানি নজির স্থাপন করবে বলে মনে করছেন আইনি বিশ্লেষকরা।