প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ২২:৪৫
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
ঢাকার বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুই ছাত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় মোট আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে ছয়জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯ এপ্রিল বিকেলে পারভেজ ও তার বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এসময় ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রী সেখানে এসে পারভেজের হাসি-ঠাট্টাকে নিজেদের প্রতি অবমাননাকর মনে করে অভিযোগ তোলেন। এ নিয়ে পারভেজের সঙ্গে প্রাইমএশিয়ার কয়েকজন ছাত্রের বাগ্বিতণ্ডা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করলেও, ঘটনার কিছুক্ষণ পর পারভেজকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মেহরাজ ইসলামকে গাইবান্ধা থেকে এবং অপর অভিযুক্ত মাহাথির হাসানকে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্তরা স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত ছিল।
এছাড়া, ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রী—ফাতেমা তাহসিন ঐশী ও ফারিয়া হক টিনা—কে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা পারভেজের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক অভিযোগ এনে ঘটনার সূত্রপাত ঘটিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্তে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যা মামলার অগ্রগতিতে সহায়ক হবে।
এই হত্যাকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ও ছাত্র রাজনীতির প্রভাব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিশোর গ্যাং ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
এদিকে, পারভেজের পরিবার দ্রুত বিচার ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে। তারা সরকারের কাছে নিরাপদ শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।