রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কোর্ট চত্বর সংলগ্ন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) স্থাপিত ওয়েস্কেলে ওজন দিতে আসা গাড়ির লম্বা লাইন তৈরী হচ্ছে। এতে মহাসড়কে গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চলতে না পারায় কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়ক সংলগ্ন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ পথও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাড়তি দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সবাইকে।
জানাযায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন স্থাপিত ডিজিটাল ওয়েব্রীজ স্কেলটি মাঝেমধ্যে নানা ধরনের ত্রুটির কারণে সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া স্কেলটির দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক ভাঙ্গাচোড়া ও ওজন পরিমাপক ওয়েস্কেলও গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) থেকে বিকল হয়ে পড়েছে যার ফলে ওজন স্লিপ নিতে আসা পণ্যবাহি গাড়ির মালের চালান রসিদের সাথে ওজন স্লিপ হাতে লিখে দেয়া হচ্ছে। হাতে লিখে দেওয়ার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী সময় লাগে। এত করে যানবাহনের বাড়তি চাপ সামাল দিয়ে উঠতে না পারায় মহাসড়কে স্কেল এলাকায় যানজট তৈরী হচ্ছে। যানজটের কারণে পাশেই থাকা গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেট বন্ধ হয়ে যায়। চলাচলরত ছোট-বড় যানবাহন এই এলাকায় দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকতে বাধ্য হয়। এছাড়া ব্যস্ততম মহাসড়কে চলাচলরত দুরপাল্লার পরিবহনগুলো দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়। আবার এসব গাড়ি স্কেল থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার পরই দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে ফের লম্বা লাইনের সিরিয়ালে পড়তে হয়। ফলে বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হয় যানবাহনের যাত্রী ও চালকদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্কেলের বিপরিত পাশে মহাসড়ক জুড়ে পাশাপাশি দুটি গাড়ি আসা যাওয়ায় অনেক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া অ্যাপ্রোচ সড়ক ভাঙ্গাচোড়া ও খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওজন নিতে আসা পন্যবাহী ট্রাকগুলো অনেকটা জায়গা ঘুড়ে স্কেলে উঠতে হয়। এ সময় এসব গাড়ির কারণে মহাসড়ক আটকে যানজট সৃষ্টি হয়। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে কোন কোন সময় স্কেল থেকে মহাসড়কে ২-৩ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট দেখা দেয়। যানজটের কারণে গোয়ালন্দ রেলগেটে দূর্ঘটনার ঝুঁকি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢোকার একমাত্র রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এসময় জরুরী কোন রোগী হাসপাতালের সামনে এসে বাড়তি বিড়ম্বনায় পড়ে।
ট্রাকের ওজন স্লিপ দিতে বিলম্ব হলে মহাসড়কের অর্ধেকটা জুড়ে একপাশে ট্রাকের লম্বা লাইন বাকি অর্ধেকটায় গাড়ি মুখো-মুখি হওয়ায় সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় বাস-ট্রাকগুলোকে ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। স্কেলের দুই পাশে ঢাকা-খুলনা গামী যানবাহনর ২-৩ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে ওয়েস্কেলের কারনে বাড়তি ভোগান্তি হচ্ছে।
স্থানীয় কিছু লোকজনের সাথে কথা বললে তারা ওয়েস্কেলটি অন্যত্র স্থাপনের দাবী জানিয়ে বলেন, স্কেলটির কারণে প্রায় প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এমনকি প্রতিদিন রাতেও দীর্ঘ যানজট তৈরী হচ্ছে। এতে করে দৌলতদিয়া ঘাটের মতোই চিত্র এখানেও লক্ষ্য করা যায়। এমনকি যানজটের কারণে একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ পথটিও পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেককে রোগী নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে ওয়েস্কেল টি যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে ডিজিটাল সিষ্টামে স্লিপ দেয়া যাচ্ছে না, হাতে লিখে প্রত্যেকটি ট্রাকের ওজনের স্লিপ দেয়া হচ্ছে। যার কারণে একটু সময় লাগছে। যানজটের বিষয়ে বলেন, গোয়ালন্দ মোড় থেকে পুলিশ একযোগে ট্রাক ছেড়ে দিলে ওয়েস্কেল এলাকায় সাময়িকভাবে যানজট তৈরী হয়। এরপর স্কেলটি অন্যত্র স্থাপনের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।