কলাপাড়ায় ৯ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
আনোয়ার হোসেন আনু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৩ই আগস্ট ২০২১ ০৮:০৮ অপরাহ্ন
কলাপাড়ায় ৯ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেহাল

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া থেকে তারিকাটা পর্যন্ত ৯ কি. মি. সড়কের অবস্থা বেহাল। যানবাহন চলাচলে শুধু ভোগান্তি হচ্ছে তা নয়, মানুষজনেরও পায়ে হেঁটে চলাচল করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। কলাপাড়া উপজেলা সদরের সাথে পাশের আমতলী ও তালতলী উপজেলায় যাতায়াতের অন্যতম পথ হিসেবে এ সড়কটি পরিচিত। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত সড়কটির মেরামত করার জন্য দাবি জানিয়েছেন।



সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিশানবাড়িয়া, বাইনবুনিয়া, চৌকিদার বাড়ির মোড়, দ্বিত্তা স্কুলের মোড়, গামুরিবুনিয়া স্কুলের মোড় এলাকার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এসব স্থানের সড়কের ছাল-বাকল উঠে গেছে। সড়কের ভাঙা অংশে কাঁদা-পানি জমে রয়েছে। এতে পড়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে সড়কের ইট-বালু, পিচ উঠে গিয়ে সবচেয়ে খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নিশানবাড়িয়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘এটি এখন শুধু উপজেলার একটি সড়কই নয়। এ সড়কটি এখন আঞ্চলিক সড়ক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কারণ এ সড়ক দিয়ে আমতলী-তালতলী উপজেলায় যাতায়াত করা যায় সহজেই। অথচ ভেঙে-বিধ্বস্ত হয়ে সড়কটি পড়ে রয়েছে, সেদিকে কারও নজর আছে বলে মনে হয়না।’ অটো চালক মোস্তফা খান বলেন, ‘প্রতিদিন কয়েকশ যাত্রীবাহী মোটরসাইকেল, পিক আপ, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান চলাচল করে এ সড়কে। আমরা যাত্রী উঠাইয়া ঠিকমতো চালাইতে পারিনা। রাস্তার গর্তে পইর‌্যা আমাগো গাড়ির ক্ষতি হয়। তা ছাড়া সড়কে চলতে গিয়ে যাত্রীদেরও কষ্ট হয়, আর মোগো জানেরও কিছু থাহেনা।’



সড়কটির সবচেয়ে ভয়াবহ ভাঙন কবলিত এলাকা হলো বাইনবুনিয়া। এখানে গিয়ে দেখা গেছে, অন্তত সড়কের ৫০ ফুট এলাকা ভেঙ্গে গেছে। ভাঙা অংশের গভীরতা হবে অন্তত ৪ ফুটের মতো। স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মো. শাহীন, কৃষক গ্রামের সাইদুল খান, ফারুক হাওলাদার বলেন, গত এক সপ্তাহে বাইনবুনিয়া গ্রামের সড়কের এই ভাঙা অংশে অন্তত ২০টি পণ্যবাহি কাভার্ড ভ্যান ও পিক আপ আটকে ছিল। গ্রামবাসির সহায়তায় আটকে পড়া এসব পরিবহনকে গর্ত থেকে তুলে সড়ক যোগাযোগ সচল করতে হয়েছে।স্থানীয়রা জানান, তালতলী উপজেলার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উন্নয়ন কাজের জন্য সব ধরণের  মালামাল পরিবহন এখন এ সড়ক দিয়েই করা হয়। তা ছাড়া বিভিন্ন ইটভাটার ইট ছয় চাকার ট্রলিতে এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নেয়া হয়। এতে সড়কের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ায় সড়কটি ভেঙে এমন বেহাল হয়েছে।



চাকামইয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীর কেরামত বলেন,‘এ সড়কটির দুরাবস্থা নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে একাধিকবার বলেছি। এমনকি উপজেলা পরিষদের সভায়ও এ সড়কের বেহাল দশা তুলে ধরে জরুরী মেরামত করার জন্য বলেছি। আমি শুধু আশ্বাসই পেয়েছি। জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে সড়কটির মেরামত আজ পর্যন্ত করা হয়নি।’ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. মহর আলী বলেন, ‘আমরা সড়কটির বেহাল দশা দেখে এসেছি। আপাতত সড়কের ৩ দশমিক ৯৩০ মিটার ভাঙা অংশের মেরামত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ জন্য প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৪২০ টাকা। পরবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাকি অংশটুকুর মেরামত কাজও করার পরিকল্পনা রয়েছে।