আত্রাইয়ে বিপদসীমার উপরে নদীর পানি, পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই প্রতিনিধি, নওগা:
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৫৩ অপরাহ্ন
আত্রাইয়ে বিপদসীমার উপরে নদীর পানি, পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ

নওগাঁর আত্রাইয়ে গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে আত্রাই নদীর পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরের ২০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আত্রাই উপজেলার জগদাশ ও শিকারপুর এলাকার দুই স্থানে এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ বাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসী প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।


জানা যায়, গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আকষ্মিকভাবে নদীর পানি ফুসে উঠে। এতে করে গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার আত্রাই-বান্দাইখাড়া সড়কের নন্দনালী নামক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে। এক পর্যায় ভাঙনের শুরু হলে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়ে যায়। পরে আত্রাই উপজেলা চেয়াম্যান আলহাজ এবাদুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঞ্চিতা বিশ^াস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে স্থানীয় লোকজন বাঁশ পাইলিং করে বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধ করেন।

 

এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী নন্দনালী, শলিয়া, তাড়ানগর, রায়পুর, আটগ্রাম, ডাঙ্গাপাড়া, রসুলপুর, জাতোপাড়া, জাতআমরুল জিয়ানীপাড়া, শিবপুর, জগদাস, পারমোহনঘোসসহ প্রায় ২০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি এসব মানুষ দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আত্রাই নদের পানি আত্রাইয়ে ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্রায় তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরেছেন। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধের বেশকিছু এলাকা চরম ঝঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ।


এ অবস্থায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ টিকিয়ে রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বস্তায় বালু ভরে গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে মেরামতের কাজ করছেন স্থানীয়রা। 


পাঁচুপুর ইউপির মহিলা ইউপি সদস্য জগদাস গ্রামের বাসিন্দা রহিমা বলেন, এক রাতের মধ্যেই আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। আমাদের গ্রামসহ অন্যান্য গ্রামের বিপুল সংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এসব পানিবন্দি মানুষের জন্য সরকারীভাবে এখন পর্যন্ত কোন ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি। 


আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঞ্চিতা বিশ^াস বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বাতœকভাবে চেষ্টা করছি। কোথাও বাঁধ ভেঙে কৃষকের যেন ফসলহানি না হয় এ জন্য সার্বক্ষণিক আমরা পর্যবেক্ষণে রয়েছি। পানিবন্দি মানুষের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। সরকারীভাবে সহযোগিতার জন্য চাহিদাপত্র উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।