হিলি স্থলবন্দরের প্রধান সড়ক চলাচলের অনুপযোগী, জনভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: শনিবার ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:১৭ অপরাহ্ন
হিলি স্থলবন্দরের প্রধান সড়ক চলাচলের অনুপযোগী, জনভোগান্তি

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর। এই বন্দর থেকে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকলেও দীর্ঘদিনেও হচ্ছে না বন্দরের প্রধান সড়কের সংস্কার কাজ। ফলে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও বর্ষাতে হিলি স্থলবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হচ্ছে না। তাই ভাঙা-চোরা রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব গর্তে পানি জমে থাকায় চলতি বর্ষায় ও কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে পথচারীদের দুর্ভোগ। তেমনি ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহনও। এতে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাঘাত ঘটার  আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা প্রশ্ন তুলছেন, এসব গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কারে বাধা কোথায়? দীর্ঘ দিনেও কেন বা হচ্ছে না এসব গুরুত্বপূর্ণ সড়কের কাজ?


স্থানীয়রা বলছেন, হিলি স্থলবন্দরের প্রধান সড়ক চারমাথা থেকে রাজধানী মোড় ও হিলি পানামা পোর্টের গেট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত। এর মধ্যে চারমাথা মোড় থেকে রাজধানী মোড় পর্যন্ত রাস্তার কার্পেটিং উঠে গেছে কয়েক বছর আগেই। এরপর প্রতিবারই বর্ষা এলে ঝুঁকিপূর্ণ এসব সড়কে মাঝে-মধ্যে ইট আর বালু ফেলে জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করা হয়। যা বিভিন্ন পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য মোটেও উপযোগী নয়। অন্য দিকে পানামা পোর্ট থেকে সিপি মোড় পর্যন্ত চলমান রয়েছে ফোরলেন সড়কের নির্মাণ কাজ। তবে দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এই সড়কটির ফোরলেন কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু হবে।


বন্দরের আমদানিকারক রবিউল ইসলাম বলেন, সরকার এই বন্দর থেকে প্রতি অর্থবছরে ২০০ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় করে থাকে। কিন্তু নতুন করে সড়কের কাজ করা হয়নি। যানবাহনের চালকসহ এলাকাবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অথচ এত গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের সড়কগুলো সংস্কার করা হচ্ছে না। সংস্কার করতে সমস্যা কী? কেন এতো টালবাহানা?


একই প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাকচালক মনিরুল, তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে বিপজ্জনক হয়ে থাকা এই সড়কে ছোট-বড় গর্তে আটকে পড়ছে আমদানি-রপ্তানি পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক। নষ্ট হচ্ছে ট্রাকের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। প্রায় ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। কর্তৃপক্ষ কেন এসব সড়ক সংস্কার করছে না?। ছোট বড় গর্তে ভরা এসব সড়কে আমাদের অনেক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।

এলাকাবাসী এনামুল হক বলেন পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানিতে সড়ক আর ড্রেন একাকার হয়ে যায়। বোঝা দায় হয়ে পড়ে কোনটি ড্রেন আর কোনটি সড়ক। চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় পথচারীদের।


হিলি নাগরিক উন্নয়ন কমিটির নেতা ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলী বলেন, হিলি স্থলবন্দরের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চারমাথা মোড় থেকে রাজধানী-মহিলা কলেজ পর্যন্ত রাস্তার কাজ শুরু হবে হচ্ছে শুনে আসছি দীর্ঘদিন থেকে কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন কাজ শুরু হয় নাই। ফলে বর্ষায় জন দুর্ভোগ বেড়ে যায়। আমারা নাগরিক উন্নয়ন কমিটি রাস্তার কাজ শুরুর দাবীতে গত ২০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় লোকজনদের মানববন্ধন এর ডাক দেয়। কিন্তু দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন এসে অল্প সময়ের সময়ের মধ্যে রাস্তার কাজ শুরু আশ্বাস দেওয়ায় আমরা আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। অল্প সময়ের মধ্যে কাজ না হলে আবারও আমরা কর্মসূচি ঘষনা করবো। 


হকিমপুর (হিলি) পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, পৌর এলাকার পানি নিষ্কাশনে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ড্রেন তৈরির কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে জলবদ্ধতা থাকবে  না।


দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)-এর সহকারী প্রকৌশলী আনফ সরকার বলেন, ‘হিলিবন্দরের চারমাথা মোড় থেকে রাজধানী মোড় পর্যন্ত সড়ক ফোরলেন হবে। ইতোমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আশা করছি, অচিরেই ফোরলেন কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যে পানামা পোর্ট এর গেট থেকে সিপি মোড় পর্যন্ত ফোরলেন সড়কের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।