প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৩, ২:১১
শ্রাবণ মাসেও দেখা নেই তেমন বৃষ্টির। দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর হিলিতে তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। হঠাৎ করে ইদানীং শুরু হয়েছে এই উপজেলায় অসহনীয় লোডশেডিং চলছে। এতে সাধারণ জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। অপর দিকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কতৃপক্ষ বলছেন, চাহিদার তুলনায় অর্ধেকের কম সরবরাহ পাওয়ায় লোডশেডিং চলছে।
জানা গেছে, হাকিমপুর হিলি এলাকায় ফুলবাড়ি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। হাকিমপুর হিলি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন এলাকায় রয়েছে কয়েক হাজার গ্রাহক।
গ্রাহকদের অভিযোগ, গরমের শুরু থেকে লোডশেডিং থাকলেও হঠাৎ করে ইদানীং মারাত্মক লোডশেডিং চলছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অর্ধেক সময়ে চলছে লোডশেডিং। টানা দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পরে বিদ্যুৎ আসলে আবারও এক দেড় ঘন্টা পরে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে এভাবেই পল্লী বিদ্যুৎ এর অসহনীয় লোডশেডিং চলছে। গরমে শিশু ও বয়স্কদের ভোগান্তি বাড়ছে। ভোগান্তি বেড়েছে, সংবাদকর্মী, পেশাজীবি, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের। এদিকে বাসা বাড়ির ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংসসহ নানা জিনিস পত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম। স্কুল ও কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। ঈদকে ঘিরে ঈদের পরে আত্মীয়-স্বজন আসছেন গ্রামে। তাদের ভোগান্তি আরও বেশি।পল্লী বিদ্যুতের সেবা নিয়েও গ্রাহকদের রয়েছে অভিযোগ।
হাকিমপুর উপজেলার কোকতাড়া গ্রামের পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক মিজানুর রহমান, হাসমত আলী, আবু রায়হান ও মাহবুর রহমান বলেন, এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিলে ২/৩ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে। পরবর্তীতে আবার এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। মাস শেষে বিল তো কম আসে না। আবার এক মাসের বিল পরিশোধ না থাকলে সংযোগ বিছিন্ন করে দেওয়া হয়। তাছাড়া হঠাৎ বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার জ্বলে বা পুড়ে গেলে অভিযোগ দেওয়ার পরও ঠিক করতে আসে না। আসলেও এর বিনিময় তাদের টাকা দিতে হয়।
হাকিমপুর হিলি পৌরসভার গ্রাহক রঞ্জিত বসাক, মুকুল হোসেন, আব্দুল খালেক মন্ডল ও সাইদুর রহমান বলেন, তীব্র গরমের কারণে এমনিতেই খুব খারাপ অবস্থা। তার উপর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। রাতে দিনে মিলে গড়ে ১০-১২ বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করে।
উপজেলার বাংলাহিলি ডলি মেমোরিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহারিয়ার আলমাস রক্তিম বলেন, তীব্র গরমে জীবন অতিষ্ঠ হয়েছে। তার উপর আবার ঘনঘন বিদ্যুৎ এর অসহনীয় লোডশেডিং। ক্লাসের পড়াশোনাও ঠিক মতো করতে পারছি না। গতকাল রাতে ৬-৭ বার বিদুৎ আসা যাওয়া করেছে। আজ দিনের বেলাও একই অবস্থা।
হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তাফিজার রহমান মিলন বলেন, হঠাৎ করে হিলিতে পল্লী বিদ্যুৎ এর অসহনীয় লোডশেডিং শুরু হয়েছে। কোন গুরুত্বপূর্ণ নিউজ করতে বসে কম্পিউটার চালু করে অর্ধেক কাজ করতে দেখা যায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এতে এই উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদকর্মীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
হাকিমপুর হিলি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সাব জোনাল অফিসের এজিএম বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, হঠাৎ করে কয়েক দিন থেকে তীব্র দাবদাহের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে, যার ফলে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের হাকিমপুর হিলি এলাকার জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তার বিপরীতে বিদ্যুৎ পাচ্ছি আড়াই থেকে তিন মেগাওয়াট। কখন কখন আবার ২ মেগাওয়াট। যার ফলে লোডশেডিং চলে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা ৬:৪৪ মিনিটে তিনি মুঠো ফোনে জানান, বর্তমানে ফুল লোড রয়েছে তাই লোডশেডিং ও নাই। শীঘ্র বিদ্যুৎতের উৎপাদন বেড়ে যাবে। তারপর আর লোডশেডিং থাকবে না বলে জানান তিনি।
এজিএম বিশ্বজিৎ সরকার জানান, লোডশেডিং কারো হাতে নাই। এখানে আমাদের করার কিছু নেই। এটি উপর মহলের বিষয়।