মিয়ানমার সেনাপ্রধানসহ ৪ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বুধবার ১১ই ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:০৯ অপরাহ্ন
মিয়ানমার সেনাপ্রধানসহ ৪ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে শুনানি চলার মধ্যেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মিয়ানমার সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংসহ ৪ শীর্ষ জেনারেলের ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে গত জুলাইয়ে বর্মি সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল মার্কিন সরকার। কিন্তু মঙ্গলবার সেটি বাড়িয়ে আরও কঠোর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ।

একই অবরোধ মিয়ানমারের আরও তিন শীর্ষ কমান্ডারের ওপর আরোপ করা হয়েছে। এরা হলেন: সেনাবাহিনীর উপপ্রধান ভাইস সিনিয়র জেনারেল সোয়ে উইন, ৯৯ লাইট ইনফানট্রি ডিভিশনের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থান ও এবং ৩৩ লাইট ইনফ্যানট্রি ডিভিশনের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং অং। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযুক্তদের যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সম্পত্তি থাকলে সেটি জব্দ করা হবে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের যে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন অপরাধ বলে গণ্য হবে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রতি সম্মান জানাতে মিয়ানমারের এই চারজন ছাড়াও বিভিন্ন দেশের আরও ১৪ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ রকম নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ট্রেজারি বিষয়ক মন্ত্রী স্টিভেন মানুচিন বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিরীহ জনগণের ওপর কোনো ধরনের নির্যাতন, অপহরণ, যৌন সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড বা বর্বরতা সহ্য করবে না। আমেরিকা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে এবং আমরা দোষী ব্যক্তি ও সহায়তাকারী যেখানকারই হোক, তাদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনব।’রোহিঙ্গা-মিয়ানমার-অবরোধ

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যাসহ নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে জাতিসংঘ ইতোমধ্যে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ বিষয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ওআইসি’র পক্ষ হয়ে করা গাম্বিয়ার মামলারই শুনানি চলছে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে।

মঙ্গলবার প্রথমদিনের শুনানিতে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চলা বর্বরতার বিবরণ তুলে ধরে গাম্বিয়া। শুনানিতে মিয়ানমারের নৃশংসতার বিবরণ দিয়ে রাখাইনে জাতিগত নিধনের কথা তুলে ধরে গণহত্যা বন্ধের নির্দেশও চাওয়া হয়। শুনানির দ্বিতীয় দিনে আজ বুধবার নিজেদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে মিয়ানমার। নিজ দেশের পক্ষে এবং গণহত্যা-নির্যাতনের অভিযোগের বক্তব্য তুলে ধরবেন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি।

দ্বিতীয় দিন সু চির বক্তব্যের পর বৃহস্পতিবার সকালে গাম্বিয়া এবং বিকেলে মিয়ানমার যুক্তি-খণ্ডনে চূড়ান্ত বক্তব্য তুলে ধরবে। মামলায় গাম্বিয়াকে সহায়তা করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদ বিন মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ থেকেও একটি প্রতিনিধি দল সেখানে অবস্থান করছে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর