প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৬
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা আরও বেশি। ধ্বংসস্তূপের নিচে কয়েকজন আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোববার (৬ জুলাই) সারাদিন ও রাতে গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি হামলা চালানো হয়। বিশেষ করে শেখ রাদওয়ান ও আল-নাসর এলাকায় দুটি বাড়ি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়, যেখানে বাস্তুচ্যুত বহু পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গাজা সিটি ও নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে দুইটি বেসামরিক সমাবেশে হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। উত্তর গাজা সিটির আল-সাফতাউই পাড়ায় ড্রোন হামলায় তিন ভাই নিহত হয়েছেন। এছাড়া শেখ রাদওয়ানের আশ্রয়কেন্দ্রে আরেক ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।
পশ্চিম গাজা সিটির শাতি শরণার্থী শিবিরে স্কুল-পরিবর্তিত আশ্রয়কেন্দ্রে হামলায় শিশুসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। গাজা শহরের আল-দারাজ পাড়ায় বিমান হামলায় একই পরিবারের তিনজন নিহত হন এবং আরও কয়েকজন আহত হন।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুচ্যুত বেসামরিকদের অস্থায়ী তাঁবুতে দুটি বিমান হামলায় গর্ভবতী মহিলা ও শিশুসহ কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। খান ইউনিসের আল-আলবানি মসজিদের কাছে ড্রোন হামলার পর ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও তিন শিশুসহ চার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ড্রোন হামলায় একই পরিবারের আটজন নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গাজার পরিস্থিতি দিন দিন সংকটজনক হচ্ছে। অসহায় ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য হাত পেতে আছে। আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য এবং মানবতাবাদী সহায়তা পৌঁছানোর জন্য।
হামলার ফলে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো অচলাবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে। আহতদের সুষ্ঠু চিকিৎসা দিতে যথেষ্ট সুবিধা নেই। শিশু ও নারী সহ বেসামরিক লোকজন সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
গাজার অবরুদ্ধ মানুষের দুর্দশার প্রতিরোধ ও শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের এখনই সময় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সাধারণ মানুষের প্রাণ ও সম্পদ রক্ষা করতে সকল পক্ষের সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।