প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২৬
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টযুক্ত ওষুধ আমদানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এ শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে বিশেষ করে ভারতের ওষুধ শিল্প বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে লিখেন, ২০২৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে যেকোনো ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্টযুক্ত ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যে ১০০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করা হবে। তবে যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করবে, তারা এই শুল্ক থেকে অব্যাহতি পাবে।
তিনি আরও স্পষ্ট করে জানান, নির্মাণাধীন বলতে জমি খনন শুরু হয়েছে বা নির্মাণকাজ চলছে— এমন অবস্থাকে বোঝানো হবে। অর্থাৎ যেসব কোম্পানি মার্কিন মাটিতে উৎপাদন কেন্দ্র গড়ার কাজ শুরু করেছে তাদের ক্ষেত্রে এ শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। এই ঘোষণা মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রাম্পের দাবি, এ শুল্ক আদায় মার্কিন সরকারের বাজেট ঘাটতি কমাতে এবং দেশের ঘরোয়া শিল্পকে উৎসাহিত করতে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, ওষুধ শিল্পের মূল লক্ষ্য হবে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা। এতে কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং দেশীয় অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।
নতুন ঘোষিত শুল্ক কাঠামোয় শুধু ওষুধই নয়, আরও কিছু খাতে বড় ধরনের ট্যারিফ আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। রান্নাঘরের ক্যাবিনেট ও বাথরুম ভ্যানিটিতে ৫০ শতাংশ, আসবাবপত্রে ৩০ শতাংশ এবং ভারী ট্রাকে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে বলে তিনি জানান। এতে অন্যান্য দেশ থেকে আমদানির খরচ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্ত ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় ওষুধের বড় বাজার রয়েছে। ভারতীয় কোম্পানিগুলো এখন নতুন নীতি অনুযায়ী মার্কিন মাটিতে কারখানা স্থাপন করার বিষয়ে চিন্তা করতে পারে বলে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
মার্কিন প্রশাসনের এই নীতিগত পরিবর্তন বৈশ্বিক বাণিজ্যেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে ওষুধ আমদানি কঠিন হয়ে পড়তে পারে, যা আন্তর্জাতিক বাজারের দামে প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে কেউ কেউ সুরক্ষাবাদী নীতি হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকে মনে করছেন এটি ঘরোয়া শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার একটি সাহসী পদক্ষেপ। এর ফলে মার্কিন নির্বাচনের আগে দেশটির অর্থনৈতিক নীতিতে বড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর প্রভাবও পড়তে পারে।