প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৫
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় অধিবেশন শুরু হবে এবং প্রধান উপদেষ্টা দিনের ১০ম বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে। এ ভাষণকে ঘিরে দেশ-বিদেশের কূটনৈতিক মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
সূত্র মতে, প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরবেন। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন যে, অধ্যাপক ইউনূস গত ১৪ মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম ও দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের অগ্রগতি সম্পর্কে বিশ্ব সম্প্রদায়কে অবহিত করবেন। তার ভাষণে গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করতে সরকারের নেয়া উদ্যোগ বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে।
প্রেসসচিব আরও জানান, ইউনূসের বক্তব্যের অন্যতম মূল বার্তা হবে আগামী বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন। নির্বাচনটি হবে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য ও উৎসবমুখর— এমন প্রত্যাশাই তুলে ধরবেন তিনি।
জাতিসংঘের এ অধিবেশনে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপনের একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আলোচনার জন্ম দিতে পারে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে আলোচনা চলছে। এই সংকট নিরসনে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাবেন ইউনূস বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বিশেষ করে মানবিক সহায়তা ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার আহ্বান তুলতে পারেন।
অধিবেশনে ইউনূসের ভাষণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সংস্কারের পাশাপাশি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তির বিষয়ও গুরুত্ব পাবে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি ইতিবাচকভাবে ফুটে উঠবে এবং ভবিষ্যতের সহযোগিতা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এ অধিবেশনকে কেন্দ্র করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তারা মনে করছেন, প্রধান উপদেষ্টার এই ভাষণ দেশের জন্য নতুন আস্থা ও সমর্থনের ক্ষেত্র তৈরি করবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান তুলে ধরার এই সুযোগকে দেশের অগ্রযাত্রার আরেকটি ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।