প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৫, ১৮:২৭
মালয়েশিয়ায় শ্রম খাতে নিযুক্ত বিদেশিদের মধ্যে মৌলবাদী চক্র সক্রিয়ভাবে আইএসের জন্য সদস্য নিয়োগ করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল। শুক্রবার (৪ জুলাই) কুয়ালালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সম্প্রতি চালানো সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ৩৬ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে সিরিয়া ও বাংলাদেশের আইএস সেলকে অর্থায়ন এবং সদস্য সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। আইজিপি জানান, এই জঙ্গি চক্রটি মালয়েশিয়ার অভিবাসী শ্রমিকদের লক্ষ্য করে কারখানা, পেট্রোল স্টেশন এবং নির্মাণ খাত থেকে সদস্য নিয়োগে সক্রিয় ছিল।
তদন্তে উঠে এসেছে, তারা ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করত। আইএস সংযুক্ত এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ১৫০ থেকে ২০০ সদস্য সক্রিয় ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন আইজিপি। আটককৃতদের মধ্যে অনেকে সিরিয়া যুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং বাংলাদেশে আইএসের প্রভাব বিস্তারে সহায়তা করছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, এই গোষ্ঠী মূলত ‘টাচ এন গো’, ‘বিকাশ’ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানি এক্সচেঞ্জ সার্ভিস ব্যবহার করে তহবিল সংগ্রহ করত। সদস্য হতে হলে বছরে ৫০০ রিঙ্গিত বাধ্যতামূলক চাঁদা দিতে হতো এবং আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী বাড়তি অবদান রাখার কথাও ছিল। এই অর্থের মাধ্যমে সিরিয়া ও বাংলাদেশে চরমপন্থী কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে ফান্ড গঠিত হতো।
আইজিপি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার দণ্ডবিধির ৬ক অধ্যায়ে সন্ত্রাসে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সংগঠনে অংশগ্রহণ, উগ্র মতবাদ প্রচার এবং সন্ত্রাসী তহবিল সংগ্রহের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এছাড়া ১৫ জনকে নির্বাসনের জন্য অভিবাসন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বাকি ১৬ জনকে ২০১২ সালের নিরাপত্তা অপরাধ (বিশেষ ব্যবস্থা) আইনের অধীনে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, দেশটিতে কোনো ধরনের উগ্রবাদ বা সন্ত্রাসী কার্যক্রম বরদাস্ত করা হবে না এবং শ্রমিক পরিচয়ে এমন অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।