মালয়েশিয়ার জোহর রাজ্যে অভিবাসন বিভাগের অভিযানে ১০৫ জন অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার হয়েছে, যার মধ্যে ৭৭ জন বাংলাদেশি। রবিবার গভীর রাতে জোহরের বাতু পাহাত, মুয়ার ও সেগামাত অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। দেশটির অভিবাসন বিভাগের (জেআইএম) পরিচালক দাতুক মোহাম্মদ রুশদি মোহাম্মদ দারুস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শ্রমিক আবাসন কমপ্লেক্সে পরিচালিত অভিযানে ৩২৯ জনের কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয় এবং বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ১০৫ জনকে আটক করা হয়। আটক অভিবাসীদের মধ্যে ৭৭ জন বাংলাদেশি, ১৬ জন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ, সাতজন ইন্দোনেশিয়ান নারী, দুইজন মিয়ানমারের পুরুষ, দুইজন পাকিস্তানি এবং একজন ভারতীয় রয়েছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বয়স ১৮ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে। তারা মালয়েশিয়ায় বৈধ অনুমতি ছাড়া অবস্থান করছিলেন, যা দেশটির অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩ এর ৬(১)(সি) ধারার লঙ্ঘন। এছাড়া, ১৫ (১)(গ) ধারার অধীনে নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থানের অভিযোগেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযানের আগে সাধারণ মানুষের অভিযোগ পাওয়া যায় যে, অনেকে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া শেয়ার্ড হাউসে বসবাস করছেন। এর ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তারের পর ১০৫ জনকে পন্টিয়ানের পেকান নেনাস ইমিগ্রেশন ডিপোতে রাখা হয়েছে। অভিবাসন বিভাগের পরিচালক জানান, আরও তদন্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে, অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়া এবং অবৈধ শ্রমিক নিয়োগের জন্য নিয়োগকর্তা ও বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের কারণে মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রায়ই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিশেষ করে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কাজ করা ও বসবাস করা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে এই ধরনের অভিযানে আটক অভিবাসীদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে। বিশেষ করে আটককৃতদের আইনি সহায়তা পাওয়ার সুযোগ এবং তাদের প্রতি যথাযথ আচরণের বিষয়টি আলোচনায় আসছে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন মনে করে, অভিবাসী কর্মীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে বৈধকরণের সুযোগ ও কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। এই ঘটনার পর অনেক অভিবাসী কর্মী আরও সতর্ক হয়ে চলার পরামর্শ পেয়েছেন। অভিবাসন আইন মেনে চলার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হালনাগাদ রাখা এবং নিয়োগকর্তার মাধ্যমে বৈধতার বিষয়টি নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মালয়েশিয়ায় অভিবাসীদের জন্য কঠোর নীতি থাকায় বৈধতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত অভিযানের কারণে যাদের কাগজপত্রের সমস্যা রয়েছে, তারা বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তাই যারা বৈধভাবে অবস্থান করতে চান, তাদের যথাযথ অনুমোদন নিয়ে থাকা জরুরি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।