বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের অংশ হিসেবে চীনের সহায়তায় তিনটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “নীলফামারীতে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। এর জন্য প্রাথমিকভাবে ১৬ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। বিষয়টি সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।” এই হাসপাতালটি নির্মিত হলে দেশের উত্তরাঞ্চলে চিকিৎসা খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দ্বিতীয় হাসপাতালটি হবে ঢাকার সাভার ধামরাই এলাকায়, যেখানে একটি পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এখানে দুর্ঘটনায় আহত ও চলাচলে অক্ষম রোগীদের জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা থাকবে।
তৃতীয় প্রকল্প হিসেবে চট্টগ্রামে ৫০০ থেকে ৭০০ শয্যার আরও একটি হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। এটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে চীনের অর্থায়নে একটি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, “বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে এই হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারীর হাসপাতালটি সবচেয়ে অগ্রসর পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে জমি খোঁজা শুরু হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “চীন আমাদের একটি রোবোটিক ফিজিওথেরাপি সেট উপহার দিয়েছে। এটি বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে রয়েছে। আমরা সেটটি বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাবেক বিএসএমএমইউ) স্থাপন করবো। এর জন্য ৬ হাজার বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছে।”
এই অত্যাধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে আন্দোলনে ও দুর্ঘটনায় আহত রোগীরা উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা পাবেন। একদল চিকিৎসককে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে। ভবিষ্যতে উত্তরবঙ্গ ও চট্টগ্রামেও এমন প্রযুক্তি সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে সেবা দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব শফিকুল আলম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. আবুল খায়ের, নিটোর পরিচালক ডা. মো. আবুল কেনান এবং প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।
এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে এক নতুন যুগের সূচনা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।