প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১৮:২
দেশজুড়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৮৩ জন। চলতি বছর ইতোমধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ জনে।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সর্বশেষ মৃত্যুবরণকারী রোগী একজন নারী। আক্রান্তদের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকার বাইরের অঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৩৮৩ জনের মধ্যে ৩২৩ জনই ঢাকার বাইরের বাসিন্দা, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য আরও আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৯ হাজার ৮৬৭ জনে পৌঁছেছে, যাদের মধ্যে পুরুষ রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৮২৫ এবং নারী রোগীর সংখ্যা চার হাজার ৪২ জন। ঢাকার বাইরের এলাকা ছাড়াও রাজধানীতেও ডেঙ্গুর ছড়িয়ে পড়া অব্যাহত রয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা ও দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণই এই রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে। অতীতের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, এ সময়ে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার বংশ বিস্তার দ্রুত ঘটে, যা ডেঙ্গু ছড়ানোর মূল কারণ।
এদিকে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় প্রতিনিয়ত চাপে পড়ছে হাসপাতালগুলো। অনেক ক্ষেত্রেই রোগীরা প্রথম দিকে জ্বর, মাথাব্যথা ও শরীরে ব্যথাকে গুরুত্ব না দিয়ে দেরিতে হাসপাতালে আসছেন, ফলে জটিলতা তৈরি হচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনই যদি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও নাগরিকদের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ না করা হয়, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে। তারা মশার প্রজননস্থল ধ্বংস, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের ওপর জোর দেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিবৃতিতে সকল নাগরিককে মশার কামড় থেকে বাঁচতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে এবং ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।