প্রকাশ: ৯ জুলাই ২০২৫, ১৭:২৮
দেশে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ। বুধবার প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে নতুন করে একজন মারা গেছেন এবং এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪০৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সর্বশেষ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায়। উল্লেখযোগ্যভাবে, শুধু এই এলাকাতেই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২১ জন ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভর্তি হয়েছে বরিশাল বিভাগে, যেখানে একদিনেই ৯৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৮ জন, ঢাকা বিভাগে ৬৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫৩ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৬ জন, খুলনা বিভাগে ৩৫ জন, রাজশাহীতে ৩১ জন, রংপুরে ৫ জন, ময়মনসিংহে ৪ জন এবং সিলেটে ২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রিপোর্ট অনুসারে, বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৪ জন। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটিতে ৫ জন, চট্টগ্রাম ও খুলনায় ৪ জন করে ৮ জন, রাজশাহীতে ২ জন এবং ময়মনসিংহ ও বৃহত্তর ঢাকায় একজন করে মোট ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে, তবে এবার পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। মশা নিধনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও জনসচেতনতা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
তারা জানান, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর তদারকি ও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শহরের অলিগলিতে জমে থাকা পানি এবং আবর্জনা অপসারণে গাফিলতির কারণে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়েছে।
এদিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এর মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা হাসপাতালে চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরে বসে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন।
পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই রোগ মোকাবেলা করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা। তারা আরও বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে না আনলে আগামী দিনগুলো আরও বিপজ্জনক হতে পারে।