প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১৯:৩৫
ডেঙ্গু পরিস্থিতি ফের উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪২৯ জন, যা চলতি বছরের এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভর্তির রেকর্ড। রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সময়ে এসব রোগী বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে স্বস্তির বিষয় হলো, এ সময়ে নতুন করে ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নতুন ভর্তিকৃতদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪৯ জন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা। চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৭ জন, ঢাকা বিভাগের সিটি কর্পোরেশনের বাইরের এলাকায় ৬১ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৪২ জন এবং দক্ষিণ সিটিতে ৪৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে খুলনা বিভাগে ২১ জন ও রাজশাহী বিভাগে ৫৪ জন আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩৫৮ জন রোগী চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৮৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন বলে জানানো হয়।
চলতি বছর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ২৯৬ জনে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের, যা রোগের প্রাদুর্ভাব ও ব্যবস্থাপনার দিক থেকে উদ্বেগজনক একটি চিত্র ফুটিয়ে তোলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমের কারণে মশার বিস্তার দ্রুত বাড়ছে, যা ডেঙ্গুর ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা নাগরিকদের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি মশা নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন নানা পদক্ষেপ নিলেও পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত তথ্য প্রকাশ করে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করলেও ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে মাঠপর্যায়ে কার্যকর ব্যবস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডেঙ্গু মোকাবেলায় শুধু সরকার বা স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর দায় চাপিয়ে লাভ নেই। জনগণকে নিজ উদ্যোগে বাসা ও আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে এবং উপযুক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।