প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০:৪৬
রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত হওয়া একটি বিশেষ কমিটি। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে গুমের ঘটনাগুলো সুষ্ঠুভাবে তদন্ত ও সমাধানের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে।
সরকারের এই পদক্ষেপটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও বলবৎকারী সংস্থাগুলোর ওপর একটি বিশেষ দায়িত্ব আরোপ করছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গঠিত পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিশন অব ইনকোয়ারি গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান করার জন্য কাজ করবে। কমিশনের দায়িত্ব হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার জোরপূর্বক গুমের সাথে জড়িত থাকার সম্ভাব্য ঘটনা তদন্ত করা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা।
এই কমিশনে দেশের বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), এবং কোস্টগার্ড। এই সংস্থাগুলোর যে কোনো সদস্য যদি গুমের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কমিশনের প্রথম সভা ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে গুলশানে কমিশনের কার্যালয়ে কমিশনের সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন। প্রথম সভায় কমিশনের কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই সভায় কমিশনের কাজের সময়সীমা, দায়িত্ব এবং কর্তব্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকারের এই পদক্ষেপটি জনসাধারণের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার রক্ষার প্রতি তাদের অঙ্গীকারের একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গুমের ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করতে এবং বিচারের আওতায় আনতে এই কমিশনের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের কাছে এটি একটি আশার আলো হিসেবে এসেছে। তারা আশা করছেন, এই কমিশনের মাধ্যমে তাদের প্রিয়জনদের সন্ধান পাওয়া যাবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের এই পদক্ষেপটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নত করতে সাহায্য করবে।
এমন সিদ্ধান্তে দেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলোও সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, এই ধরনের উদ্যোগ গুমের ঘটনা কমাতে এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।
সবমিলিয়ে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এই সিদ্ধান্তকে একটি সময়োপযোগী এবং কার্যকরী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করবে।