প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১৭:৩১
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি ঘিরে কথিত মানবিক করিডোর নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে সাফ জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) মো. খলিলুর রহমান। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কারও সঙ্গে এই বিষয়ে কোনো কথাবার্তা হয়নি এবং ভবিষ্যতেও এমন কিছু হবে না।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি মানবিক করিডোর সংক্রান্ত গুজব ও বিভ্রান্তি দূর করতে চান বলেও জানান।
তিনি বলেন, করিডোর বলতে বোঝায় এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে বিপদাপন্ন মানুষকে সংকটময় এলাকা থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এমন কিছু হচ্ছে না। এখানে কাউকে সরানো হচ্ছে না বরং জাতিসংঘ শুধু ত্রাণ পরিবহনের সীমিত সহযোগিতা চেয়েছে।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও জানান, রাখাইনে চলমান সহিংসতার কারণে অনেক রুট বন্ধ থাকায় জাতিসংঘ বাংলাদেশকে সীমান্ত সংলগ্ন কিছু এলাকা দিয়ে ত্রাণ পাঠাতে বলেছে। জাতিসংঘের সহায়তাকারী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে এসব ত্রাণসামগ্রী রাখাইনের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য পৌঁছে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ গত ছয়-সাত বছর ধরে বাংলাদেশের চোখের সামনে রোহিঙ্গাদের সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে। এখন তারা শুধুই বলেছে, সীমান্তের খুব অল্প একটি জায়গা ব্যবহার করে রাখাইনে ত্রাণ পৌঁছানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য।
মানবিক করিডোর নিয়ে আলোচনা বা সমঝোতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতিসংঘেও খোঁজ নিলে দেখা যাবে আমরা এ নিয়ে কোনো আলোচনাই করিনি। আরাকানে করিডোর গঠনের মতো পরিস্থিতি নেই, বরং জরুরি ত্রাণ পৌঁছানোই আসল প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি যতদিন অস্থিতিশীল থাকবে, ততদিন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও এগোনো যাবে না। অনেকে প্রশ্ন করছেন আমরা কেন আলোচনা করিনি, আমি বলছি অস্তিত্বহীন বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে ত্রাণ পাঠানোর সম্ভাব্য মানবিক করিডোর নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। যদিও সরকার বলছে, এটি কেবল মানবিক উদ্দেশ্যে এবং কোনো সামরিক বা কূটনৈতিক বিবেচনায় নয়, তবু জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে সমালোচক মহল।