প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১৮:২৩
র্যাবের অতীত ব্যবহার নিয়ে সরব হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের একটি বাহিনী যখন রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হয়, তখন তা শুধু আইনশৃঙ্খলা নয়, মানবাধিকার পরিস্থিতিরও চরম অবনতি ঘটায়। র্যাবকে এমন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ফলেই অতীতে গুম, খুনসহ নানা ধরনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, যা দেশের নাগরিক সমাজ ও আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের কারণ হয়েছে।
এই উপদেষ্টা জানান, র্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অভিযোগ যে সময়ে সবচেয়ে বেশি ছিল, সেটি ছিল বিগত ফ্যাসিস্ট শাসনামল। সে সময়ে বিরোধীদল ও ভিন্নমত দমন করতেই র্যাবকে ব্যবহার করা হয়েছে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে। তাই এই বাহিনীর কার্যক্রমকে শুধুমাত্র আইনি ও পেশাদার মানদণ্ডে পরিচালনা করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে র্যাব যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তা মূলত আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে। অপরাধী গ্রেপ্তার, মাদকবিরোধী অভিযান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাহিনীটি সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তবে এই কার্যক্রম যেন কখনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত না হয়, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাহিনীটি বর্তমানে তার নীতিমালার মধ্যেই থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং তাদের লক্ষ্য দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে তারা সমাজবিরোধী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিরলস অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে এক অনুষ্ঠানে র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, বাহিনীর সদস্যরা এখন আরও বেশি প্রশিক্ষিত ও মানবাধিকার সচেতন। র্যাব চায় জনগণের আস্থা অর্জন করতে এবং কোনোভাবেই অতীতের অভিযোগগুলো যেন আর না ওঠে, সে বিষয়েও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, আইজিপি বাহারুল আলমসহ সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে র্যাবের বর্তমান ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয় এবং বাহিনীটির প্রতি জনআস্থা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে উপদেষ্টা পুনরায় বলেন, একটি রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বাহিনী যতই শক্তিশালী হোক, তা যেন কখনোই রাজনৈতিক দমন-পীড়নের মাধ্যম না হয়। শুধুমাত্র পেশাগত ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা হওয়া উচিত।