প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৫:৫৪
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক অর্থবছরে ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৪০৮ কোটি ৬৯ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, পরিশোধ করা এই অর্থের মধ্যে আসল ঋণ ছিল ২৫৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার এবং সুদের পরিমাণ ছিল ১৪৯ কোটি ১৮ লাখ ডলার। ঋণের পরিমাণ এবং শর্ত অনুযায়ী এ ধরনের পরিশোধকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
সরকারের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বৃদ্ধির এই চিত্র ইতিবাচক ইঙ্গিত দিলেও, একই সময়ে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়ার পরিমাণে উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখা গেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট ৮ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ পেয়েছে, যা গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
ঋণ প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রেও পতন লক্ষ্য করা গেছে। ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছে ৮ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২২ শতাংশ কম।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বৈদেশিক সাহায্যের পরিমাণ হ্রাস পাওয়া সরকারের বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় চাপ তৈরি করছে। এতে করে অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকলেও, ঋণ পরিশোধের ধারাবাহিকতা দেশের আন্তর্জাতিক সুনাম বজায় রাখতে সহায়ক হবে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ঋণ প্রদানে আরও সতর্ক হয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের। ঋণগ্রহণের শর্ত আরও কঠোর হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা ধীরগতি দেখা দিতে পারে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও সময়মতো পরিশোধ নীতিই এই পরিস্থিতির মূল কারণ। তারা ভবিষ্যতেও দায়িত্বশীল অবস্থান ধরে রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
সব মিলিয়ে রেকর্ড ঋণ পরিশোধ যেমন দেশের সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে, তেমনি ঋণ প্রবাহে ধীরগতির ফলে অর্থনীতির ওপর বাড়তি চাপের বার্তাও বহন করছে।