প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ২২:৩
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ফিরেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার পর্যন্ত সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ৩ হাজার ২ কোটি ৬৬ লাখ ২০ হাজার ডলার, যা ৩০ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলারের সমান। এই অবস্থানকে ইতিবাচক মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা, কারণ মাসের শুরুতে বড় অঙ্কের বৈদেশিক দেনা পরিশোধ করেও রিজার্ভ উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ কিছুটা কম হলেও নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী তা ৩০ বিলিয়নের গণ্ডি পার করেছে।
এর আগে ৩ জুলাই পর্যন্ত দেশে রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার, যেখানে বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ২৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। ওই সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ছিল বলে জানানো হয়। চলতি মাসের শুরুতেই বাংলাদেশ ব্যাংক আকু সদস্যদের কাছে ২ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে, যার ফলে অনেকে ধারণা করেছিলেন রিজার্ভে বড় ধাক্কা লাগতে পারে। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, পরিশোধের পরও রিজার্ভ উল্লেখযোগ্যভাবে স্থিতিশীল রয়েছে এবং জুলাইয়ের মাঝামাঝি তা ২৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে।
বিপিএম-৬ অনুযায়ী হিসাব করলে একই সময় রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার ছিল, যা এখনও দেশের অর্থনীতির জন্য আশাব্যঞ্জক। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, রপ্তানি খাত ও প্রবাসী আয় যথাযথ প্রবাহ বজায় রাখার কারণে এই স্থিতিশীলতা সম্ভব হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডলার আয়ের উৎস যেমন রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় যদি একইভাবে প্রবাহমান থাকে, তবে ভবিষ্যতে রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে। তবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী হিসাব ব্যবধান থাকলেও সামগ্রিকভাবে প্রবণতা ইতিবাচক।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ ধরনের রিজার্ভ পরিস্থিতি আমদানি ব্যয় সামলাতে সহায়তা করবে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ বৈদেশিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর আস্থা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতেও রিজার্ভে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তারা বাজার পর্যবেক্ষণ ও হস্তক্ষেপ কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
সরকারি অর্থনৈতিক নীতিমালার স্থিতিশীলতা ও প্রবাসী আয়ের অগ্রগতি রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে, যা সামনের দিনগুলোতে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করা হচ্ছে।