প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ২১:৩০
চলতি মে মাসের প্রথম ১৭ দিনেই রেমিট্যান্স আয়ে বড় অঙ্কের অর্জন করেছে বাংলাদেশ। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬১ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯ হাজার ৬৪২ কোটি টাকার সমান। প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার বা প্রায় ১১৫৫ কোটি টাকা। এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের এই ১৭ দিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। কৃষি ব্যাংকসহ বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে আরও ১৫ কোটি ডলারের বেশি। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে সর্বোচ্চ ৯৬ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
তবে কিছু ব্যাংক রেমিট্যান্স আহরণে ব্যর্থ হয়েছে। কোনো ধরনের রেমিট্যান্স পায়নি এমন ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯টি। এর মধ্যে রয়েছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন্স ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক এবং সীমান্ত ব্যাংক পিএলসি। বিদেশি ব্যাংকের তালিকায় রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহের এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা শুরু হয়েছিল চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরু থেকেই। জুলাই মাসে রেমিট্যান্স আসে ১৯১ কোটি ডলারের বেশি। এরপর আগস্টে তা দাঁড়ায় ২২২ কোটি ডলারে, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি এবং ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৬৪ কোটি ডলারে। মার্চে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে, যা চলতি অর্থবছরে রেকর্ড হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই ধারাবাহিকতা প্রবাসী অর্থনীতিতে বাংলাদেশের শক্ত অবস্থান প্রমাণ করছে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। তাঁরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহে সরকারি উদ্যোগ, হুন্ডির দমন ও বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে প্রণোদনার সুযোগ এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। তাই এ গতি ধরে রাখতে আরও আধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষ ব্যাংকিং সেবা এবং প্রবাসীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।
এদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি টাকার মান স্থিতিশীল রাখতে এবং আমদানি ব্যয় সামলাতে এই অর্থ দেশের অর্থনীতিতে বড় সহায়ক হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।