আজমিরীগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আমিনুল ইসলাম আপন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৫ই অক্টোবর ২০২১ ০৪:৪৮ অপরাহ্ন
আজমিরীগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্লীপ এর অনুদানকৃত ৫০ হাজার টাকায় কাজ করিয়ে, ক্ষদ্র মেরামতের ২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক রোহিণী কান্ত ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া স্লীপ এর অনুদানকৃত ৫০ হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দের বিপরীতে মনগড়া ভাউচারে অধিক মূল্যে ক্রয় দেখিয়ে এর ভাউচার সংশ্লিষ্ট অফিসে দাখিল করে। সম্প্রতি বিষয়টি চাওর হওয়ায় এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। 


জানা যায়, আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ টি। বিদ্যালয়ের চাহিদার উপর ভিত্তি করে স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রাক্কলন চাহিদার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে। প্রতি ৫ বছর অন্তর উপজেলা ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক এ বরাদ্দ আসে। বাস্তবায়নের দ্বায়িত্বে থাকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। 


এরই ধারাবাহিকতায়, বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরে চাহিদার ভিত্তিতে উপজেলার ৬৫ টির মধ্যে ১৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষদ্র মেরামতের অর্থ বরাদ্দের আওতায় আসে। বরাদ্দের পরিমাণ দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকা। রনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষদ্র মেরামতের জন্য বরাদ্দ পায় ২ লক্ষ টাকা। একই অর্থবছরে স্লীপ গ্র্যান্ট সরকারি অনুদান পায় ৫০ হাজার টাকা। উল্লেখ্য, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ থেকে ২'শ হলে ৫০ হাজার, ১০১ থেকে ৩'শ হলে ৭০ হাজার ও ৩০১ থেকে ৬'শ হলে ৮৫ হাজার বরাদ্দ দেয়ার নিয়ম রয়েছে। করোনাকালীন সময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার সুবাদে স্লীপ এর বরাদ্দকৃত ৫০ হাজার টাকায় ক্ষুদ্র মেরামতের কাজ করায় ওই প্রধান শিক্ষক। 


অপরদিকে একই সময় শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস বাবদ, দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীদের জন্য খাতা, পেন্সিল, কলম ড্রয়িং বুক ক্রয়, শিক্ষক শিখানো উপকরণ ( তালিকা) ইত্যাদি দেখিয়ে ভূয়া ভাউচার তৈরি করে সংশ্লিষ্ট অফিসে দাখিল করে। এদিকে ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দকৃত ২ লক্ষ টাকার কোন কাজ না করিয়েই সমূদয় টাকা আত্মসাৎ করে প্রধান শিক্ষক রোহিণী কান্ত ভট্টাচার্য। ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দকৃত ১৪ টির মধ্যে ১০ টি বিদ্যালয়ে কাজ হলে, নিম্নমানের ও নামমাত্র কাজ করানোর অভিযোগে রনিয়া সহ ৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিল আটকে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। 


অনুমানিক দীর্ঘ ৫/৬ মাস বিভিন্ন দপ্তরে দৌঁড়ঝাপ ও তদবির করে আটককৃত বিল ছাড়িয়ে নিয়ে যায় সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া রনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রনিয়া গ্রামের লোকজন জানায়, ওই বিদ্যালয়ে কয়েক বছরের মধ্যে ২ লক্ষ টাকার কোন কাজ করানো হয়নি। 


ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কিশোরগঞ্জের ইটনার লাইমপাশা গ্রামের বাসিন্দা ও আজমিরীগঞ্জ এ,বি,সি মডেল পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। তাই উনার কাজ নিয়েই ব্যস্হ সময় অতিবাহিত করেন। প্রধান শিক্ষকের সহিত পরামর্শক্রমে উনি বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করেন। সম্প্রতি রনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষদ্র মেরামতের সমূদয় অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি চাওর হওয়ায়, এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।