প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১১:৫০
রাজধানীর মধ্যবাড্ডার একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বিএনপির গুলশান থানা শাখার যুগ্ম সম্পাদক কামরুল আহসান সাধন। রোববার রাত ১০টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে সাবেক কমিশনার কাইয়ুমের কার্যালয়ের বিপরীতে, গুদারাঘাট ৪ নম্বর রোড এলাকায়। রাজনৈতিক কর্মসূচি শেষ করে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন কামরুল, এমন সময় দুই যুবক তার খুব কাছ থেকে গুলি চালায়।
পুলিশ জানায়, হামলাকারীরা হেঁটে এসেছিল এবং তাদের মুখে মাস্ক ছিল। গুলি চালিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার পর রক্তাক্ত অবস্থায় বেশ কিছু সময় চায়ের দোকানের সামনেই পড়েছিলেন কামরুল। আশপাশের লোকজন পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলেও চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। গুলি লেগেছে তার বুক, পিঠ ও ঘাড়ে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি এবং হামলার মোটিভ নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কামরুল আহসানের স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, তার স্বামী রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের শিকার হয়েছেন। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন এবং বলেন, তার স্বামীর কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না।
বাড্ডা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, নিহত কামরুল একজন ডিশ লাইনের ব্যবসায়ী ছিলেন। তার মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে কামরুল আহসানের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদরে। মৃত্যুর খবরে তার এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীরাও এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রাজধানীতে জনবহুল এলাকার মধ্যে একজন রাজনীতিককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করার ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাও মাঠে নেমেছে বলে জানা গেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।