প্রকাশ: ১৭ মে ২০২১, ১৪:৪৭
নওগাঁর আত্রাই উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারন সম্পাদক সরদার সোয়েব (৪২) এর ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় ১২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জন কে আসামী করে দায়ের করেছেন। মামলা হয়েছে। মামলায়আত্রাই উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ বেগমকে হুকুমের (তার নির্দেশ) ১ নম্বর আসামী করা হয়েছে। সোমবার সকালে (১৭ মে) আহতের স্ত্রী সাবরিনা সুলতানা বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলার পরিকল্পনাকারী হিসাবে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ বেগম কে বেলা ১১টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করেছে আত্রাই থানা পুলিশ।
এর আগে রবিবার (১৬ মে) দুপুরে উপজেলার নিউ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় সরদার সোয়েব এর অফিসে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ বেগমের ছেলে ক্যাডার বাহিনী মির্জা রাব্বীর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠে। এতে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্ব জখম হয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। সোমবার ভোরে রাজশাহী থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডী পপুলার হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশংঙ্খাজনক।
স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরদার শোয়েব প্রতিদিনের ন্যায় রবিবার দুপুরে উপজেলা নিউ মার্কেটে ঠিকাদারি কাজে ব্যক্তিগত অফিসে যান। হঠাৎ
মির্জা রাব্বী তার দলবল নিয়ে সরদার সোয়েব এর উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ফেলে রেখে চলে যায়। শরীরের বেশ কিছু জায়গায় গুরুত্ব জখম হয়। দুই হাত ও পায়ের মাংস কেটে ঝুলে যায়। বাজারের লোকজন জানতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। হামলার পর জড়িত থাকার অভিযোগে মমতাজ বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছিল। অবশেষে তাকে আটক দেখিয়ে মামলা হয়েছে।
আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাজশাহীর বাগমাড়া উপজেলায় ঠিকাদারি ৬৫ লক্ষ এবং ধারকৃত ২ লক্ষ মোট ৬৭ লক্ষ টাকা সোয়েবের নিকট থেকে পাবেন তারা। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তার ছেলে রাব্বী মির্জা বহুবার অনুরোধ এবং দেন-দরবার করেও টাকা দেয়নি। সরদার সোয়েব এর সঙ্গে তাদের ব্যবসা নিয়ে আর্থিক লেনদেন ছিল এ হামলার কারন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। এরসূত্র ধরেই তার ওপর হামলা হয়েছে।
জিজ্ঞাবাদের জন্য মমতাজ বেগমকে থানায় নেয়া হয়। আহতের স্ত্রী বাদী হয়ে মমতাজ বেগম এর নির্দেশে হামলা হয়েছে মর্মে তাকেসহ ১২জনকে আসামী করে মামলা করেছেন। মামলার পর সোমবার দুপুরে তাকে নওগাঁ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। বাকী আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে মমতাজ বেগম উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তার ছেলে মির্জা রাব্বী সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী গড়ে তোলে। মা ও ছেলের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে অনেকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মির্জা রাব্বীর বিরুদ্ধে ছিনতাই, সরকারি জায়গা দখলের পর স্থাপনা নির্মাণ করে বিক্রি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
#ইনিউজ৭১/এনএইচএস/২০২১