জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শুক্রবার সকাল ১০টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্বাগত জানান দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক। এরপর তিনি সরাসরি উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে যান। সেখানে রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এই সফরে তিনি রোহিঙ্গাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস নির্মাণাধীন কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নেন।
সন্ধ্যায় উখিয়ায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস প্রায় এক লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন। ইফতারের সময় রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব এবং তাদের সমস্যার কথা শোনেন। তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য আরও সহায়তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফর বাংলাদেশের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সফর শেষে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব একসঙ্গে ঢাকায় ফেরেন।
প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি ছিল মুহাম্মদ ইউনূসের প্রথম কক্সবাজার সফর। তার এই সফরকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সরকারের অঙ্গীকারের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসের সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের মধ্যকার সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন হতে পারে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা আরও জোরালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সফর শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা ঢাকায় ফিরে এসে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সঙ্গে তাদের সফর সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন বলে জানা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।