প্রকাশ: ৯ মে ২০২৫, ১২:৩৬
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য ও সংস্কৃতি মানে শুধুমাত্র বাংলা ভাষা বা বাংলাদেশ সীমাবদ্ধ নয়, তার প্রভাব ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বজুড়ে। তার রচনায় প্রতিফলিত হয়েছে মানুষের চিরন্তন যাতনা, প্রেম, প্রকৃতি, সমাজ ও জীবন। তিনি এমন একজন সাহিত্যিক, যিনি মানুষকে নিখুঁতভাবে বোঝার চেষ্টা করেছেন এবং তার লেখনীর মাধ্যমে মানুষের মন, ভাবনা এবং অনুভূতিকে এক অসীম দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরেছেন। তার প্রতিটি লেখা, কবিতা কিংবা গান মানবতার গভীর অনুভূতিকে স্পর্শ করে, যা সময়ের চক্রে কখনো পুরনো হয় না।
৮ মে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আত্রাই উপজেলার পতিসরে অনুষ্ঠিত ১৬৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে এক আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, যতদিন পৃথিবীতে মানবতা বিদ্যমান থাকবে, ততদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাসঙ্গিকতা অটুট থাকবে। তার রচনা ও দর্শন আজও মানুষের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলছে।
বিকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হয়। তিন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানটিতে রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ, রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন এবং নাট্য মঞ্চায়নসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি। তিনি উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন এক সত্যিকার বিশ্বনাগরিক, যিনি পূর্ব ও পশ্চিমের সেতুবন্ধন স্থাপন করেছেন এবং বাংলাকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করেছেন। তার সাহিত্য মানবিক মূল্যবোধ, ঐক্য এবং শান্তির বার্তা দিয়ে পৃথিবীকে আলোকিত করেছে।
এছাড়া নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল, আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামাল হোসেন এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, বগুড়া সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো: বেলাল হোসেন এবং নওগাঁ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম।
তাদের বক্তৃতায় বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য মানুষের মনের গভীরে প্রবাহিত হয়, যা বর্তমান প্রজন্মকেও সমানভাবে অনুপ্রাণিত করছে। তার চিন্তা ও রচনাগুলি শুধু দেশের মাটিতেই নয়, সারা পৃথিবীতে এক বিরাট সাংস্কৃতিক সেতুর কাজ করছে।
এ অনুষ্ঠান ছিল এক গৌরবময় উপলক্ষ, যা স্মরণ করিয়ে দেয়, বিশ্বকবির প্রাসঙ্গিকতা কেবলমাত্র সময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং চিরকাল আমাদের ভাবনা ও মননে প্রভাব ফেলবে।