প্রকাশ: ৯ মে ২০২৫, ১২:৪৪
রাজধানী ঢাকার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম ফের বেড়েছে। বিশেষ করে সবজি এবং মুরগির দাম বাড়তে থাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য বাজার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। শুক্রবার (৯ মে) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বেগুন, করলা, ঢেঁড়স, শসা, কাঁচা মরিচ, পটোল—সব কিছুর দামই বেড়ে গেছে। আগে যেসব সবজি ৫০-৬০ টাকায় পাওয়া যেত, এখন সেগুলোর দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে পৌঁছেছে।
এই অবস্থায় বাজারে সবজি কেনার জন্য আসা সাধারণ মানুষ খুবই অসন্তুষ্ট। করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়, বেগুন ৮০-১০০ টাকায়, ঝিঙে ৭০-৮০ টাকায়, টমেটো ৩০-৪০ টাকায় এবং গাজর ৪০ টাকায়। শসা ৭০-৮০ টাকা, পটোল ৭০-৮০ টাকায় এবং সজনে ডাটা ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজির দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি পেঁয়াজ, আদা এবং রসুনের দামও বাড়ছে। গত দুই সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে, একই সঙ্গে আদা ও রসুনের দামও বেড়েছে।
এছাড়া মুরগির দামও বাড়ছে। ব্রয়লার মুরগি এখন কেজিপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেশি। সোনালী মুরগি ৩২০ টাকা এবং কক ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ফিডের দাম বৃদ্ধি, খামারে উৎপাদন কমে যাওয়া এবং পরিবহণ খরচ বাড়ানোর কারণে এই দাম বৃদ্ধি হয়েছে। তবে অনেকেই মনে করছেন, মজুতদাররা ইচ্ছাকৃতভাবে দাম বাড়াচ্ছে।
গরু ও খাসির মাংসের দাম আগের মতোই রয়েছে, গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের বাজারে স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে। রুই, কাতল, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া সহ অন্যান্য মাছের দাম তুলনামূলকভাবে কম।
বাজার করতে আসা মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। খিলক্ষেত বাজারে এক ক্রেতা বলেন, ‘সবজির দাম শুনলেই ভয় লাগে, মুরগি কিনতেও একই অবস্থা। এখন মনে হচ্ছে, ডাল-ভাত খেয়ে দিন পার করতে হবে।’ সাধারণ চাকরি করা একজন বলেন, ‘মাসের শুরুতেই বাজারে গিয়ে পুরো বেতন শেষ হয়ে যায়। সরকার যদি এখনই কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে বাজারে গিয়ে কেনাকাটা করা সম্ভব হবে না।’
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় নজরদারির ঘাটতি এবং সরবরাহ ব্যবস্থার দুর্বলতাই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। তারা আরও বলেছেন, বাজারের স্থিতিশীলতা আনতে টিসিবির মাধ্যমে কম দামে পণ্য সরবরাহ বাড়ানো, বাজার মনিটরিং জোরদার করা এবং মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। তাদের মতে, কৃষি উৎপাদন এবং পরিবহণ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে এই সংকট কাটানো সম্ভব নয়।